আপনজন ডেস্ক: পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসে মঙ্গলবার বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের সাফল্য নিয়ে বর্ণনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে ভারতীয় দূতাবাসে প্রবেশের পর তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। লন্ডনে নিয়োজিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম কে দুরাইস্বামী মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে চা পানের আয়োজন করেন। তাদের মধ্যে আলাপচারিতা হয়। তারপর মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেন বাণিজ্য সম্মেলনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ব্রিটিশ শিল্প মহলকে বুঝিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গ এখন শিল্পে বিনিয়োগের জন্য উর্বর ভূমি। আর সেই সঙ্গে জানান দেন, বাংলা ক্রমে ক্রমে বেকারত্বের বেড়াজাল থেকে ব্যাপক অগ্রগতির পথে। এমনকী বাংলায় মেয়েরা যে ক্ষমতায়নেরে মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, বাংলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথাও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের শহরে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে থাকেন। এখানে সব উৎসব সমান ভাবে পালিত হয়। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য বজায় থাকে। আমাদের সব আছে। কিন্তু বাংলার গৌরব নষ্ট হয়েছে আমাদের আগের সরকারের জন্য।
স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে কয়লা শিল্প যেমন তার বক্তৃতায় স্থান পেয়েছে তেমনি তিনি দাবি করেছেন বাংলায় ক্রমে ক্রমে গরিবি কমছে। বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, দেশ জুড়ে বেকারত্ব বাড়লেও বাংলায় তা কমেছে। ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২৩-২০২৪ সালের মধ্যে বেকারত্ব কমেছে ৪৬ শতাংশ। এর পাশাপাশি তিনি ৯৪টা সামাজিক প্রকল্প চালুর কথা উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে দারিদ্রতা হ্রাস পাওয়ার কৃতিত্ব দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে তিনি বলেন, দারিদ্র সীমার নিচে থাকা মানুষদের সকলকে আমরা খাবার তুলে দিয়েছি। ২০১১ সালে বাংলায় দারিদ্র সীমার নিচে ৫৭.৬০ শতাংশ মানুষ বসবাস করতেন। এখন এই শতাংশ হল ৮.৬০ শতাংশ। তাই বাংলায় বিনিয়োগ করলে যে ক্ষতির মুখ দেখতে হবে না, তা নিয়ে ব্রিটিশদের আশ্বস্ত করেন। এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে গিয়ে তিনি কলকাতা থেকে সরাসরি লন্ডনগামী বিমান চালুর করার জন্য ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্রতি আহ্বান জানা। তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মমতা দাবি করেন, কলকাতা থেকে লন্ডনে আসতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। সরাসরি হলে কম সময় লাগবে। আর এই রুট যে বিমান সংস্থা লাভবান তা বিমানের ভর্তি আসনকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।
মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় নারী ক্ষমতায়নের প্রাধান্য দেওয়ার তত্ত্ব তুলে ধরে বলেন, আমি দুবারের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলাম। কয়লা মন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রীও ছিলাম। সাত বারের সাংসদ। এখন তিনবারের বিধায়ক। আমরা যেখানে ভারতীয় সংসদে ৩৩ শতাংশ মহিলাদের সংরক্ষণের জন্য আলোচনা করি। সেই সময় আমার দলে ৩৯ শতাংশ মহিলা নির্বাচিত সাংসদ। আর পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৫০ শতাংশ।
পর্যটন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পর্যটন খুব উন্নত। কারণ, আমাদের এখানে তিনটি বিষয় আছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক। এখান থেকে সূর্যোদয় দেখা যায়। তাই ভিটামিন-ডি ও পাবেন।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে কম খরচে গরিব মানুষ চিকিৎসা করান।
মুখ্যমন্ত্রী একদিকে যেমন জঙ্গলমহলের কথা তুলে ধরেন তেমনি আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য সুন্দরবনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে। আর বাংলা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়ে যাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct