আপনজন ডেস্ক: গাজা জ্বলছে আর চেয়ে চেয়ে নির্লজ্জের মত দেখছে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো। যারা চাইলেই থামাতে পারে ইসরায়েলের এই নির্মমতা। তারা উল্টো পক্ষ নিয়েছে নেতানিয়াহু সরকারের। যুদ্ধ বিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে পবিত্র রমজান মাসেই গাজার মুসলমানদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি এক দিনেই তারা হত্যা করেছে ১ হাজারের বেশি তাজা প্রাণ যার মধ্যে আবার বেশিরভাগই শিশু। এবার সামাজিক মধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনি এসব শিশুদের আত্মচিৎকরের কিছু ভিডিও। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একটি শিশু বলছে, ‘প্লিজ ষ্টপ আইএম ইউসুফ আই এম ফরম গাজা, নো ফুড নো ওয়াটার নো হোম, হেল্প মি প্লিজ!’ যার অর্থ দাঁড়ায়, ‘আমি ইউসুফ বলছি গাজা থেকে দয়া করে থামুন, এখানে খাবার নেই পানি নেই থাকার জায়গা নেই, দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।’ ভিডিওটি দেখে বোঝা যায় শিশুটির বয়স ৪-৫ বছরের বেশি হবে না। যেভাবে নরপিশাচ ইসরায়েল গাজা উপত্যকা জুড়ে আগ্রাসন চালাচ্ছে তাতে করে ওরা যেনো গাজার অবুঝ শিশুদের নিধন করার জন্যই মাঠে নেমেছে। ওদের হৃদয় কখনো গলে না, কিভাবে গুলি চালাতে পারে কি করে বোমা ফেলতে পারে এসব ছোট্ট কোমলমতি শিশুদের ওপর? ওদের কি মায়া লাগে না? নাকি ওরা মানুষই নয়? কোন জানোয়ারের থেকেও অধম কিছু? ঠিক এভাবেই ফেসবুকে লিখেছেন সুমাইয়া শিমু নামের বাংলাদেশি এক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী। অনামিকা তন্বী নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘কি নৃসংশতা পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম শিশুদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে আর চেয়ে দেখছে সুবোধরা। বাহ এটাই বুঝি আমাদের মানবতা? এখন কি চোখে দেখে না তারা? নাকি টাকার কাছে অন্ধ হয়ে গেছে পশ্চিমাদের বিবেক?’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার এসব শিশুদের আরও বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে কাউকে দেখা যায় খাবারের জন্য কাঁদতে। কাউকে আবার দেখা যায় থালা হাতে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়াতে। এদের বেশির ভাগেরই বয়স ৫ বছরেরও কম। কি অবিশ্বাস্য তাই না? আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি সেনাদের ছোড়া বোমার আঘাতে মৃত মা কে দাফন করার পর সেই কবরের পাশে বসে মা কে ডাকছে একটি ছোট্ট শিশু। যে বয়সে এসব শিশুদের থাকার কথা বাবা মাসহ পরিবারের সকলের আদরে, সেই বয়সে এখন ওরা যুদ্ধ করছে খাবারের জন্য। এর ওপর তো বোমা আর গোলাবারুদের ভয় রয়েছেই। কখন যে কোন দিক থেকে দখলাদার ইসরায়েলি বাহিনীর বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে ছোট্ট দেহটি।
ওদের অমানবিকতা এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, গাজা উপত্যকার এক মোয়াজ্জিনের আজান দেওয়ার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, আজানের সময় কণ্ঠ ভারী হয়ে গেছে তার, রীতিমতো কান্নার সুরে যেনো মনে মনে আল্লাহকে বিচার দিচ্ছেন এসব অমানুষদের বিরুদ্ধে। কবে থামবে ইসরায়েলি এই নৃসংশতা? কবে নতুন ভোরের দেখা পাবে এসব অবুঝ শিশুরা? তা জানা নেই কারোরই।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct