আপনজন ডেস্ক: তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) এই নেতা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছিলেন। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি কেঁসুলিরা তাকে ‘অপরাধী সংগঠনের নেতা সন্দেহভাজন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
এই ঘটনার জেরে ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, মেট্রো স্টেশন ও রাস্তায় নেমে সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কিছু মেট্রো সেবা স্থগিত করা হয়েছে।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পিপার স্প্রে ব্যবহার করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
ইস্তাম্বুলের নগর ভবনের সামনে হাজারো মানুষ শীত উপেক্ষা করে বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা ‘এরদোয়ান, স্বৈরশাসক!’ ও ‘ইমামোগলু, তুমি একা নও!’ বলে স্লোগান দেন।
এ ঘটনার জেরে তুর্কি সরকার চারদিনের জন্য ইস্তাম্বুলে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। তবে সারা দেশে আরও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইমামোগলুর স্ত্রীসহ বিরোধী দলের নেতারা জনগণকে ‘কণ্ঠ তুলে ধরতে’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এক ভিডিওবার্তায় ইমামোগলু বলেছেন, তুরস্কের জনগণের ইচ্ছাকে স্তব্ধ করা যাবে না। গ্রেফতারের সময় পুলিশ যখন বাড়ির বাইরে ছিল, তখন তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পক্ষে আমরা অবিচল থাকবো।
ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় শহরে চার দিনের বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রাজনীতিক, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী রয়েছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণ সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, তুর্কি সরকার দেশটিতে এক্স, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার সীমিত করে দিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct