আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার অনুপস্থিতিতে রাজ্য পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন।
পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমার, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (ভূমি) বিবেক কুমার এবং অর্থ সচিব প্রভাত মিশ্র গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজকর্মের তদারকি করবেন।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমের মতো প্রবীণ মন্ত্রীরা আমলাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকার সুষ্ঠুভাবে চালাবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে তারা তার পুরো সফরে তার সাথে যোগাযোগ রাখবেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের প্রবীণ নেতা সুব্রত বক্সী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সমালোচকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাঁরা বিশ্ব মঞ্চে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
আমরা যখন সিঙ্গাপুর গিয়েছিলাম, তখন আমাদের সম্পর্কে একটি মিথ্যা বক্তব্য ছড়ানো হয়েছিল, যেন ‘বাংলা’ নিজেই একটি নেতিবাচক অর্থ বহন করে।
মানুষকে বুঝতে হবে যে মহারাষ্ট্র যদি ভারতের আর্থিক রাজধানী হয়, তবে বাংলা তার সাংস্কৃতিক হৃদয়ভূমি। রাজনৈতিক বিরোধীরা তাঁর সরকার সম্পর্কে মানহানিকর ই-মেল ছড়িয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিদেশ থেকেও এসব বার্তা আমাদের কাছে পৌঁছেছে। আমাদের শত্রুরা কি মনে করে ভারতের বাইরে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই? বাংলার সুনাম ক্ষুণ্ণ বরদাস্ত করা হবে না। আপনি চাইলে আমাকে অপমান করতে পারেন, কিন্তু বঙ্গমাতাকে অপমান করবেন না।
মন্ত্রিগোষ্ঠী ও টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়ে মমতার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সূত্রের খবর অনুযায়ী, লন্ডন সফরে কিছু বাংলা বিরোধী শক্তি অশান্তি পাকানোর ছক কষছে, বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অক্সফোর্ড ভাষণ নিয়ে। তারা ঈর্ষান্বিত এবং রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসাপরায়ণ।
কুনাল ঘোষের অভিযোগ, মমতার অনুপস্থিতিতে বাম, অতি-বাম ও বিজেপির একাংশ রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে ষড়যন্ত্র করছে।
বাম, অতি-বাম ও বিজেপি সমর্থকদের একাংশ এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মুখ্যমন্ত্রী একটি মর্যাদাপূর্ণ আমন্ত্রণে সাড়া দিচ্ছেন। আর সেই অনুষ্ঠানে তারা বাংলাকে অপমান করার চেষ্টা করবে, মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলবে। নিজেদের মধ্যে কারও কারও বার্তা অনুযায়ী, বাংলার নেতিবাচক খবরের জন্য তারা ‘কিছু করার’ চেষ্টা করছে। তারা যদি এমন ষড়যন্ত্র করে তাহলে বাংলার মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের যোগ্য জবাব দেবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেন যে বাংলায় নির্বাচন কঠোর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, ভোট প্রক্রিয়া কমিশনার মনিটরিং করেন। কোনও কারচুপি নেই, শুধু দুষ্কৃতীরা অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
বামপন্থী, অতি বামপন্থী উপদল ও সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো তার সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, তারা ভিন্ন মনে হতে পারে, কিন্তু তারা একই এজেন্ডা ভাগ করে।
বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হিংসার কোনও স্থান নেই বলে দাবি করে মমতা ঘোষণা করেন, “এর একমাত্র উত্তর হল জনগণের রায়।
তৃণমূল কংগ্রেস তাদের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে ঘোষণা করেছিল, ২৭ মার্চ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলার জন্য মমতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিরোধীরা এই ঘোষণাকে একটি কলেজের আমন্ত্রণ হিসাবে উপহাস করেছিল, শিক্ষার মর্যাদাপূর্ণ কেন্দ্র নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct