আপনজন ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার ফুরফুরা শরিফে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন এবং পরে ৭০ জনেরও বেশি পীর সাহেব ও পীরজাদার উপস্থিতিতে ইফতার পার্টি করবেন। প্রায় ৯ বছর পর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর দু’বার ফুরফুরা শরিফে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের এক বছর আগে তাঁর আসন্ন সফর রাজনৈতিক মহলের নজর কেড়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুসলিম বিধায়কদের বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির তীব্র সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, সিপিএম এবং কংগ্রেস আইএসএফের সাথে জোট করেছিল, যার চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকী একজন ফুরফুরা শরিফ পীরজাদা।
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঝড়ের কোনও সম্পর্ক উড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, এটা অনেক আগেই শিডিউল ছিল, এটাকে কোনোভাবেই যুক্ত করা যাবে না। তাছাড়া শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিইনি।
শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটা একটা সামাজিক সফর। মুখ্যমন্ত্রী এর আগে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন করেছিলেন। প্রশাসনিক বৈঠকের দিকে মানুষ আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট সুরক্ষিত করার জন্য কাজ করছেন বলে দাবি করে কুনাল ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যখন দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে যান, তখন বিরোধীরা বলেন যে তিনি হিন্দুদের জন্য কাজ করছেন। ক্রিসমাসের সময় তিনি যখন গির্জায় যান, তখন তিনি খ্রিস্টানদের কাছে পৌঁছান বলে জানা গেছে। ফুরফুরা শরিফ যখন তাকে আমন্ত্রণ জানায় এবং সেখানে যায়, তখন তিনি মুসলমানদের কাছে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। এসব বক্তব্যের কি কোনো মানে আছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন হিন্দু ব্রাহ্মণ, কিন্তু তিনি ভারতের সংবিধান এবং তার মূল্যবোধের উপাসনা করেন। সপ্তাহখানেক আগে বিধায়ক তহবিল থেকে খরচ নিয়ে সমস্যা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে গিয়েছিলেন সিদ্দিকি।
সম্প্রতি ফুরফুরা শরিফ পীরজাদা তোহা সিদ্দিকি তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সমালোচনা করে বলেন, তিনি ১৪ বছরে ফুরফুরা শরিফের জন্য টাকা খরচ করেননি।
প্রশাসনিক সভা ও ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রিত সিদ্দিকী বলেন, তিনি উপস্থিত থাকবেন কিনা তা নিশ্চিত করতে পারছি না। তিনি বলেন, ‘এটা ভালো যে এবার সব পীর সাহেবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতেন বাছাই করা মৌলবীরা। আমি সেখানে থাকব কিনা জানি না, তবে পীর সাহেবরা উপস্থিত থাকবেন।
রবিবার তোহা সিদ্দিকি বলেন, বামফ্রন্ট আমলে ফুরফুরা শরিফে চরম গাফিলতি ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে ২০১১ সালের পর। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর আসার কথা ছিল। তবে তা বিলম্বিত হয়েছে। আমরা তার কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরব।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct