আপনজন ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত উসকে দেওয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সোমবার আঙ্কারায় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সিরিয়ার কিছু সাবেক শাসকগোষ্ঠীর অবশিষ্টাংশ দেশটিতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। এরদোগান বলেন, ‘আমরা সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত উসকে দেওয়ার যেকোনো চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে পুরো অঞ্চল এখনো সংবেদনশীল।
তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’র ‘আইনের লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার’ প্রতিশ্রুতিকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা আল-শারা’র সংযত ও শান্ত বার্তাকে স্বাগত জানাই।
আমি বিশ্বাস করি, সিরিয়ার জনগণ তাদের দেশকে আরেক দফা বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যেতে দেবে না।’ এরদোগান আরও বলেন, ‘যারা সিরিয়াকে শুধু ধর্ম বা গোষ্ঠীগত পরিচয়ে বিচার করে, তারা সংকীর্ণ মতবাদে আবদ্ধ। আমরা যখন বাথ পার্টির শাসনে এক মিলিয়ন সিরিয়ান নিহত হয়েছিল তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, আর আজও সেই অবস্থানে অটল রয়েছি।’
তুরস্কের বিরুদ্ধে নৈতিকতা নিয়ে কেউ যেন প্রশ্ন না তোলে, সে বিষয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এরদোগান ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই ইউরোপ আমাদের নতুন ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিক।’
তিনি ইউরোপের নিরাপত্তা সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই তুরস্কের ভারসাম্যপূর্ণ, দৃঢ় এবং নীতিনিষ্ঠ অবস্থান আজ আরও বেশি উপলব্ধি করা হচ্ছে।’
এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি—তুরস্কই ব্রিজের আগের শেষ এক্সিট।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যবস্থা, যা নিজেকে নীতিনিষ্ঠ দাবি করত, তা আজ ভেঙে পড়ছে। ‘এটি ধ্বংস করছে তারাই, যারা একসময় এই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিল।’
তুরস্কের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে এরদোগান বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে আমাদের জাতির মধ্যে রক্ত ও বেদনার প্রাচীর তৈরি করেছে যে সন্ত্রাসবাদ, সেটিকে নির্মূল করতে আমরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কাজ করছি।’
এরদোগান আরও জানান, সম্প্রতি তুরস্ক সফর করেছেন জর্ডানের ক্রাউন প্রিন্স হুসেইন বিন আবদুল্লাহ, উত্তর ম্যাসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হ্রিস্টিজান মিকোস্কি ও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। তিনি বলেন, ‘নতুন উদ্বোধন হওয়া নাখচিভান-ইগদির প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন আগামী ৩০ বছর ধরে নাখচিভানের সমস্ত গ্যাসের চাহিদা পূরণ করবে।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct