আপনজন ডেস্ক: রিয়াল মাদ্রিদের খেলার ধরনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে এরই মধ্যে ২৭ গোল করেছেন ফরাসি তারকা, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৪ গোল। কিন্তু এমবাপ্পে মাদ্রিদে পা রাখার পর সবাই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁর সঙ্গে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, জুড বেলিংহাম ও রদ্রিগোকে কোন পজিশনে, কোন ভূমিকায় খেলান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। এমবাপ্পেকে শুরু থেকেই খেলাতে গিয়ে আনচেলত্তি অন্য তিন ফরোয়ার্ডের একজনকে বসিয়ে রাখবেন কি না, এমন প্রশ্নও উঠেছিল। তবে রিয়াল কোচ উপায় ঠিকই বের করে ফেলেছেন। এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস খেলছেন স্ট্রাইকারের ভূমিকায়, বেলিংহাম ও রদ্রিগো খেলছেন তাঁদের পেছনে, কখনো কখনো দুই উইংয়ে। লা লিগায় পরশু রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ২–১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচেও এই ফরমেশন খেলিয়েছেন আনচেলত্তি। রিয়ালের গোল দুটি ভিনি আর এমবাপ্পেই করেছেন।
কিন্তু হোর্হে ভালদানোর মনে হচ্ছে, ভিনি ও এমবাপ্পে খেলা বানানোর চেয়ে গোল করাতেই বেশি মনোযোগী হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়ারও ঘাটতি দেখছেন তিনি। ভালদানোর পরিচয় অনেকেরই জানা। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড, ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি তাঁর। রিয়ালের খেলোয়াড় হিসেবে জিতছেন পাঁচটি শিরোপা, কোচ হিসেবে একটি। ক্লাবটির মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্বও পালন করেছেন। সেই ভালদানো মাঠে এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুসের সমন্বয়হীনতা নিয়ে মুভিস্টারের ‘এল তেরসের তিয়েম্পো’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘ওরা এমন দুই খেলোয়াড়, যাদের খেলার চেয়ে, সহযোগিতা করার চেয়ে প্রতিপক্ষের গোলকিপারের দিকে মনোযোগ থাকে বেশি। ওদের বিরুদ্ধে একে-অপরকে খুঁজে না পাওয়ার অভিযোগ আছে। তবে এটা ওদের স্বভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত।’
ভালদানো আরও বলেছেন, ‘ওরা বড় মাপের স্প্রিন্টার। সব সময় গোলের সন্ধান করে। কিন্তু মাঝেমধ্যে মনে হয়, যখন খেলায় পাসের চেয়ে শটের প্রয়োজন হয়, তখন ওরা একে-অপরকে খুঁজে নিতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। মাঠে ওদের মেলবন্ধন আরও ভালো হওয়া উচিত। আমি বলছি না যে ওরা বন্ধু নয়। কিন্তু মাঠের বাইরের সম্পর্ক সব সময় মাঠের বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করে না।’ পরিস্থিতি বোঝাতে দুই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোমারিও ও রোনাল্ডো নাজারিওর কথা বলেছেন ভালদানো, ‘আমি রোমারিওকে কোচিং করিয়েছি (ভ্যালেন্সিয়ায় থাকতে), মাদ্রিদে রোনাল্ডোকে পেয়েছি। আমি তাদের মাঠের চারপাশ চক্কর দেওয়াতাম, যেটা ছিল চীনা নির্যাতনের মতো। তারা (চক্কর দিতে) পারত না। এ ছাড়া আমি যদি তাদের বল দখলে নেওয়ার জন্য খেলতে বলতাম, তারা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। তবে গোল করার ক্ষেত্রে তারা বিশ্বসেরা ছিল। তাদের (গোলের) সুযোগ কাজে লাগানোর জন্যই নেওয়া হয়েছিল।’ রিয়ালের নিঃস্বার্থবান খেলোয়াড় হিসেবে বেলিংহামের উদারহণ টেনেছেন ভালদানো, ‘দলে আরও খেলোয়াড় আছে। যেমন—বেলিংহাম, যে প্রতিনিয়ত সতীর্থদের সহযোগিতা করে যায়। সম্মিলিত ফুটবলের ক্ষেত্রে সে যে কারও চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করে। এটিই ওর খেলার ধরন।
একজন খেলোয়াড়কে তার সহজাত খেলা থেকে বের করে আনা খুব কঠিন।’
রিয়ালের পরের ম্যাচ আগামীকাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। শেষ ষোলো পর্বের প্রথম লেগে ২–১ গোলে জিতেছিল রিয়াল। কাল ফিরতি লেগে ড্র করতে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যাবেন এমবাপ্পে–ভিনিসিয়ুসরা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct