আপনজন: ২০২৪-২৫ আর্থিক বছর শেষ হতে চললেও এরাজ্যের সরকার স্বীকৃত ও অনুদান প্রাপ্ত হাই মাদ্রাসা, সিনিয়ার মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র (এমএসকে) গুলি কম্পোজিট গ্রান্ট-এর টাকা কবে পাবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে ৷ সূত্রে খবর, রাজ্যের অধিকাংশ উচ্চ প্রাথমিক স্কুল গুলি তাদের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যার অনুপাতে প্রথম কিস্তি হিসাবে কম্পোজিট গ্রান্টের পঞ্চাশ শতাংশ অর্থ পেয়েছিল । তারপর চলতি মার্চ মাসের ৫ তারিখ প্রাথমিক স্কুল ও এসএসকে গুলির জন্যও কম্পোজিট গ্রান্টের পঞ্চাশ শতাংশ অর্থ প্রদান করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সমগ্র শিক্ষা মিশনের (এসএসএম) তরফে । গত কয়েকমাস আগে এবং চলতি মাসে দু’দফায় স্কুল গুলি কম্পোজিট গ্রান্টে’র অর্ধেক করে টাকা পেলেও এখনও পর্যন্ত মাদ্রাসা গুলি বা মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র গুলির জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় সংখ্যালঘু মহলে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে, ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকরা ৷
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আপনজন’কে বলেন, ‘২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পেয়েছিলাম, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছর শেষ হতে চললেও এবার এখনো টাকা পেলাম না ৷’এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে ৷ আশা করছি খুব দ্রুতই মাদ্রাসাগুলি কম্পোজিট গ্রান্ট-এর টাকা পাবেন ৷ মাদ্রাসা গুলো দ্রুত কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা পাওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের সচিব পিবি সেলিমও ৷
যদিও এ প্রসঙ্গে জানার জন্য সমগ্র শিক্ষা মিশনের স্টেট প্রোজেক্ট ডাইরেক্টর শুভ্র চক্রবর্তীকে ফোন করা হলে তিনি আপনজন প্রতিনিধি’র সাংবাদিক পরিচয় জেনে ফোন কলটি বিচ্ছিন্ন করে দেন ৷ পরবর্তীতে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও মাদ্রাসা গুলোর কম্পোজিট গ্রান্টের ব্যাপারে কোনোও মুখ খোলেননি বরং তাঁর কথায় অব্যবহার প্রকাশ পায় ৷ এর আগেও একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে স্টেট প্রোজেক্ট ডাইরেক্টর শুভ্র চক্রবর্তীর দ্বারা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
তবে মাদ্রাসা গুলোর দ্রুত কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা না পাওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের এ রাজ্যের প্রতি বিমাত্রী সুলভ আচরনকেই দায়ী করেছেন এ রাজ্যের তৃণমূল মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব আবু সুফিয়ান পাইক ৷ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রাপ্য অনুদান সঠিক সময়ে না পাওয়ায় ফলে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে । কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা না পেলে মাদ্রাসা গুলোর সারা বছরের টিএলএম, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, বিদ্যুৎ বিল, চক , ডাস্টার, খাতা-পত্র থেকে শুরু করে অফিসিয়াল খরচ চালানো সম্ভব নয় ৷ আমরা আশাবাদী রাজ্য সরকার খুব শীঘ্রই মাদ্রাসা গুলির কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ আর্থিক সাহায্য দেবেন ৷’
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সমগ্র শিক্ষা মিশনের (এসএসএম) মাধ্যমে স্কুল ও মাদ্রাসা গুলিকে ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যার বিচারে কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় । এই অর্থ দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষণ উপকরণ সহ ছোটো খাটো খরচ গুলি নিজেদের মত করে করতে পারেন ।
এই কম্পোজিট গ্রান্টে’র মাধ্যম সবথেকে কম অর্থাৎ তিরিশ জন শিক্ষার্থী সম্পন্ন স্কুল দশ হাজার টাকা পান এবং ক্রমান্বয়ে এক হাজার শিক্ষার্থী সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গুলি এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকে । সেই আর্থিক সহযোগিতা এবছর স্কুলগুলো পেয়ে গেলেও মাদ্রাসাগুলি কবে পাবে সেই অপেক্ষায় দিন গুনছে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি ৷
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct