নাজমুস সাহাদাত, কালিয়াচক, আপনজন: আবারও মালদহের কালিয়াচকের ভূমিপুত্র ড. সেখ সামিম আখতার বিদেশের মাটিতে গবেষণা করতে পাড়ি দিচ্ছেন । তিনি কালিয়াচকের শেরশাহী অঞ্চলের রন্নুচক গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা মুহাম্মদ রাজু সেখ একজন দিনমজুর আর মা সুফিয়া বানু হলেন আশা কর্মী। শেখ সামিম আখতার কালিয়াচক হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়াশোনা শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ২০১১ সালে চলে যায় আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি থেকে রসায়ণবিজ্ঞান বিষয়ে গ্রাজুয়েট ও মাস্টার্স করার পর ঝাড়খন্ডের ধানবাদ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ‘ইলেক্ট্রো কেমিক্যাল কার্বন ডাইঅক্সাইড রিডাক্সন’ টপিকের ওপর গবেষণা সম্পন্ন করল। তারপরেও থেমে থাকেনি শেখ সামিম আখতার। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এই মাসেই অর্থাৎ আগামী সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার কুমোহ ন্যাশনাল ইনস্টিটি্িুট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল করতে দিচ্ছেন সামিম। তার পোস্ট ডক্টরাল টপিক হল ‘সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন।’ এছাড়াও সামিম প্রচার বিমুখ স্বভাবের ছেলে এবং সে অত্যন্ত শান্ত, ধর্মপ্রাণ, মিষ্টি ভাষী, মিশুকে স্বভাবের বলে জানান এলাকাবাসী। সামিমের এই গগন-চুম্বী যাত্রার প্রতক্ষ সাক্ষী যারা তারা আজ সামিমের জন্য গর্বিত। সামিমের সাফল্যে তার বাবা মা ও একমাত্র বোন ভীষণ আপ্লুত। এর আগেও কালিয়াচক থেকে অনেকেই গবেষণা করতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। আরও অনেকেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এগিয়ে যাওয়ার জন্যে। প্রতি বছর কালিয়াচক থেকে শিক্ষার মান উন্নয়নে ধারাবাহিভাবে ছাপ রেখে যাচ্ছে। কখনও ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, খেলাধুলায়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বোর্ড র্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় দেশের সেরার সেরা হয়েছেন কালিয়াচকের কৃতি সন্তানরা। গবেষক ড. শেখ সামিম আখতার এর বাবা রাজু শেখ জানান, ছেলেবেলা থেকেই সামিম আক্তার পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী। আমি দিনমজুরের কাজ করি, অর্থাভাবে ছেলেকে সরকারি বিদ্যালয় বাদে কোথাও টিউশনি পড়াতে পারিনি। নিজের মেধার জোরেই আজ সামিম নিজের সাফল্যে এগিয়ে গেছে এতে আমরা অত্যন্ত খুশি। এবং তার মাতা সুফিয়া বানু জানান, আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে আমার ছেলে বিদেশে গবেষণা করতে যাবে। অনেক কষ্ট করে আমরা আমার ছেলেকে বড় করেছি। নিজের পরিশ্রম আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে এতদূর পৌঁছে গেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct