আপনজন ডেস্ক: মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের মধ্যে সম্ভাব্য আসন্ন বৈঠকের জন্য তুরস্ক একটি আদর্শ স্থান হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।
মঙ্গলবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় সফররত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এরদোগান বলেন, “আঙ্কারার দৃষ্টিতে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব অপরিহার্য।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আঙ্কারা স্থায়ী শান্তি আলোচনা প্রক্রিয়াকে সফল করতে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধ- যা অনেক ‘নিরপরাধ মৃত্যু’ ও বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়েছে, এখনই শেষ হওয়া উচিত। একটি ন্যায়সঙ্গত শান্তি সম্ভব করার জন্য, আমরা যে দেশগুলোকে শক্তিশালী বলে জানি শান্তির পক্ষে তাদের মনোভাব প্রদর্শন করতে হবে।”
এরদোগান উল্লেখ করেন, আমরা ২০২২ সালের মার্চে ইস্তাম্বুলে দুই দেশের (রাশিয়া ও ইউক্রেন) মধ্যে সরাসরি আলোচনার আয়োজন করেছিলাম। পক্ষগুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের ফলে আমরা কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলাম।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “গত তিন বছরে আমরা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সঙ্গে সকল স্তরে সরাসরি উদ্যোগ নিয়েছি। এসব প্রচেষ্টায়, আমরা আন্তরিকভাবে উভয় পক্ষের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য মধ্যস্থতাকারী হওয়ার চেষ্টা করেছি এবং আমরা সুনির্দিষ্ট ফলাফলও অর্জন করেছি।”
তিনি জানান, শান্তি আলোচনায় কোনও ক্ষতি নেই। পুরো বিশ্ব এখন যুদ্ধ অবসানের জন্য অপেক্ষা করছে। এই কারণে আমরা শস্য করিডোর প্রতিষ্ঠা চেয়েছিলাম। এক্ষেত্রে আমরা বাস্তব ফলাফলও অর্জন করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে পারিনি। চুক্তির আওতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে ৩০ হাজার টন শস্য রপ্তানি হয়েছিল।
রাশিয়ার শস্য রফতানির ওপর বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে মস্কো ২০২৩ সালের জুলাইয়ের পরে চুক্তিটি আর বাড়ায়নি।
এরদোগান বলেন, আমরা চাই পরবর্তী প্রক্রিয়ায়ও এটি অব্যাহত থাকুক। ইতোমধ্যে আমি জেলেনস্কির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই সিরিয়ায় শস্য পাঠানোর জন্য। তারা আমাদের কাছে যে শস্য পাঠিয়েছিল, আমরা আমাদের মিলগুলোতে আটায় পরিণত করে এই শস্য সিরিয়ায় পৌঁছে দিয়েছি এবং পৌঁছে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এটি অবশ্যই সিরিয়ার প্রশাসনকে খুব খুশি ও সন্তুষ্ট করেছে। আমি সিরিয়ার জনগণের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ সিরিয়ার পরিস্থিতিতে এটি একটি মানবিক ও বিবেকপূর্ণ কর্তব্য।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যুদ্ধ দ্রুত ও আলোচনার মাধ্যমে শেষ করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করেছেন, তা তুরস্কের গত তিন বছরের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct