অরবিন্দ মাহাতো , পুরুলিয়া, আপনজন: টমেটো টাকা কেজি, ১০ টাকায় আবার পাওয়া যাচ্ছে ১৫ কেজি। অন্যান্য সবজির দামও ঠেকেছে তলানিতে। চাষ করে মাথায় হাত কৃষকদের। জেলাতে নেই কোন হিমঘর। তাই শীতকালীন সবজি চাষ করে ফি বছর জলের দরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হয় জেলার বিভিন্ন ব্লকের চাষীদের। পরম্পরা গতভাবে যেন এ বছরও জেলার চাষীরা বিশেষ করে টমেটো চাষে এতটাই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে যে, ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে যেতে চাইছেন। মানবাজার বিধানসভা এলাকার একটা বৃহৎ অংশের মানুষ শীতকালীন সবজি থেকে মুনাফা লাভের আশায় থাকেন। কিন্তু মেট্যালা গ্রামের জবা মাহাতো দীপক, মাহাতোরা জানান, এই সময় টমেটো রয়েছে রাঙা হয়ে মাঠ ভর্তি। কিন্তু দর কোথায়? সার, বীজ, সেচ সবই তো খরচা বহুল। গতর খাটিয়ে ফসল ফলিয়েও দাম নেই! বিঘার পর বিঘা জমিতে পড়ে রয়েছে লাল টমেটো। রুখাসুখা পুরুলিয়ার মাটিতে যেন রক্ত চক্ষু দেখাচ্ছে পাকা টমেটো। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা আদিত্য মাহাতো জমি লিজ নিয়ে চাষ করেছেন। ঋণের বোঝা রয়েছে এতটাই যে, ভিন রাজ্যে কাজ করে দেনা মেটাতে হবে বলে জানালেন। অন্যদিকে বলরামপুর শহরে দেখা গেল এক বিরল দৃশ্য। বাজারে ফেলে দেওয়া টমেটোর গাদা। সেই মাঠের ফলন বাজারজাত হওয়ার পরও যাচ্ছে গরুর পেটে। আড়শা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় চাষী পরিবারের লোকজনেরা ছাগলকে দিচ্ছে টমেটো। বিক্রি হচ্ছে না, টাকা কেজি টমেটো দশ টাকায় ১৫ কেজি। কোথাও আবার বিক্রি হচ্ছে না সেই দামও। বাধ্য হয়ে গরু ছাগলকে খাওয়াতে হচ্ছে টমেটো। যার কারণে ঋণগ্রস্ত চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন একাধিক। কিভাবে সংসার প্রতিপালন করবে? কিভাবে বা চাষের খরচ জোগাড় করবে পরবর্তীতে? সেই চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে এখন তাদের। রয়েছে মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের বোঝা, এইভাবে চলতে থাকলে চাষাবাদ ছেড়ে বিকল্প কর্মসংস্থান খুঁজতে হবে তাদের।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct