আপনজন ডেস্ক: সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর মাদ্রাসা বিষয়ক মন্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছে সংখ্যালঘু মহল থেকে শুরু করে মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত অমুসলিম শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীরাও ৷ মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণে এ বছর রাজ্যের বাজেটে ৬০০টি স্মার্ট ক্লাসরুম, ১০০টি ডিজিটাল ল্যাবরেটরি এবং ৭৬টি মাদ্রাসায় সায়েন্স ল্যাবরেটরি মানোন্নয়নের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, বিরোধীদের পক্ষ থেকে ৬০০টি নতুন মাদ্রাসা সরকারি ভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে ৷ শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন সময়ে মুসলিম সম্প্রদায় ও মুসলিম প্রতিষ্ঠানগুলিকে আক্রমণ করে চলেছেন। এর প্রতিবাদে মাদ্রাসার শিক্ষক সংগঠনের নেতা আবু সুফিয়ান পাইক প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ৷ উল্লেখ্য, এ রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং চল্লিশ শতাংশ কর্মী অমুসলিম সম্প্রদায়ের ৷ পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের একটি বড় অংশও অমুসলিম সম্প্রদায়ের ৷ মাদ্রাসা সম্পর্কে অকপটে তাঁরা কি জানালেন তা তুলে ধরেছেন ‘আপনজন’ সাংবাদিক এম মেহেদী সানি।
আমি দীর্ঘ ১৫ বছর মাদ্রাসাতেই শিক্ষকতা করছি ৷ ১২ বছর সহ-শিক্ষিকা থাকার পর গত ৩ বছর হল প্রধান শিক্ষিকা হয়েছি ৷ আমার চোখে বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার মধ্যে কোনো পার্থক্য ধরা পড়েনি ৷ ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসাতে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিক্ষা লাভ করছে ৷ দীপান্বিতা পাল প্রধান শিক্ষিকা, পান্ডুয়া সুলতানিয়া হাই মাদ্রাসা, হুগলি
মাদ্রাসা ও স্কুল শিক্ষা দুটি সম মানের সমান্তরাল প্রক্রিয়া ৷ যে বা যারা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অযথা কুৎসা রটাচ্ছে তার নিন্দা জানাচ্ছি । মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে আমি গর্বিত। মাদ্রাসাতে ভালো মানের সময়োপযোগী শিক্ষাদান করা হয় ৷ জেনারেল সাবজেক্ট গুলির পাঠক্রম বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক। মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষিকা গণ সমাজের প্রকৃত মানুষ তৈরিতে ব্রতী। শম্পা পাত্র প্রধান শিক্ষিকা, হাতিয়াড়া গার্লস হাই মাদ্রাসা, উত্তর ২৪ পরগনা
আমি ২০০৭ সাল থেকে বর্তমানে মাদ্রাসায় কর্মরত। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা বা পড়ুযাদের কোনও কুরুচিকর শিক্ষা দেওয়া হয় না । মৃন্ময় শী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, নুরপুর হাই মাদ্রাসা, দ. দিনাজপুর
মাদ্রাসাতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের আগে স্কুলে শিক্ষাকতা করেছি ১৩ বছর ৷ মাদ্রাসাতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছি দীর্ঘ ১৫ বছর ৷ মাদ্রাসা ও স্কুলের মধ্যে কোনো পার্থক্য বুঝতে পারিনি ৷ সাধনা বর্মন প্রধান শিক্ষক, পাঁচলা গার্লস হাই মাদ্রাসা, হাওড়া
মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রায় সমস্ত পাঠ্যপুস্তক মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মতোই ৷ মাদ্রাসায় অতিরিক্ত আরবি ও ইসলাম পরিচয় পড়ানো হয়, যা সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি করে।গৌতম মন্ডল প্রধান শিক্ষক, মেয়ানাপুর মেহেরাবিয়া হাই মাদ্রাসা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
আমার মাদ্রাসায় ২২ জনের মধ্যে ১৪ জন হিন্দু শিক্ষক। মাদ্রাসা হল একটি আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা। অভিজিত দাস সহ-শিক্ষক, এলাহিয়া হাই মাদ্রাসা, মেদিনীপুর
ধুলিয়ান হাই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার সময় যে সম্মান পেয়েছি তা স্কুলে থাকলে হয়তো পেতাম না ৷ এখন বীরভূমের মাদ্রাসায় কর্মরত। সেখানেও সম্প্রীতির বাতাবরণ। অর্ণব সরকার সহ-শিক্ষক, চুনরি হাই মাদ্রাসা, বীরভূম
সিনিয়র মাদ্রাসা হওয়া সত্ত্বেও আমার মতো ৩-৪ জন হিন্দু স্টাফ স্বাচ্ছন্দে চাকরি করছে, কোনো অসুবিধা হয় না ৷ বিকর্ণ আগিয়ান কেঁশিলি বরকতিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
আমি দীর্ঘ ৩৫ বছর মাদ্রাসাতেই শিক্ষকতা করছি, আমাদের মাদ্রাসাতে প্রায় ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী অমুসলিম ৷ যেটা সম্প্রীতির অনন্য নজির ৷ সঞ্জীব কান্তি মন্ডল সহ-শিক্ষক, জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসা মূর্শিদাবাদ
মাদ্রাসায় শিক্ষাকতার বয়স ১৫ বছর হয়ে গেল। মুসলিম অমুসলিম সকলে একই টিফিন বক্সে খাওয়া দাওয়া করি। এখানে ধর্মীয় কোনো বিভাজন নেই। রাজনীতির কচকচানি নেই ৷ কেউ কেউ বিভাজনের জন্য মাদ্রাসা প্রসঙ্গে নিজের মতো করে মন গড়া মন্তব্য করছেন৷ প্রশান্ত ডগরা সহ-শিক্ষক, নুরপুর হাই মাদ্রাসা, সরিষা
বেশ কয়েক বছর হল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে এসেছি ৷ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা বেশি বিনয়ী। রাধেশ্যাম সামন্ত প্রধান শিক্ষক, বিশালক্ষ্মীপুর পুনা শাহ হাই মাদ্রাসা
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct