সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জলাতঙ্কে মৃত্যু হয়েছিল জয়পুর থানার ডাঙ্গরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ১২ বছরের রিজু লোহারের। পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল তিন মাস আগে স্কুলে যাবার পথে একটি পাগল কুকুর রিজুকে কামড় দেয়, তারপর তাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে পাশের গ্রামে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওঝা তাকে জল পড়া ও মন্ত্র পড়ে চুন লাগিয়ে দেয় ক্ষতস্থানে। অভিযোগ তখন নাকি ওঝা তাদের বলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অবশেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিজু লোহার ছটফট করতে থাকে এবং অসুস্থতা বোধ করে, তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে আসা হয় বিষ্ণুপুর সুপার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বুধবার সকালে রিজু লোহার এর মৃত্যু হয়। ডাক্তার জানায় জলাতঙ্কের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছিল ওই এলাকার কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা নিয়ে। এদিন গ্রামে ছুটে যায় বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকরা, স্থানীয় আশা কর্মীরা এবং ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সদস্যরা। গ্রামের লোককে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতন করা হয়। দেখানো হয় কিভাবে ওঝা বা ভন্ডরা মানুষের বিশ্বাসকে এবং তাদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে কুসংস্কার আচ্ছন্ন করে রাখে। বিভিন্ন পরীক্ষামূলক পন্থার মধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষকে সচেতন করা হয়। তাদের জানানো হয় রিজুকে কুকুরে কামড়ানোর পর ওঝার কাছে না নিয়ে গিয়ে ডাক্তারখানায় নিয়ে গেলে আজকে হয়তো তাকে মরতে হতো না।
হাজার সচেতনতার মধ্যেও ছেলেকে হারিয়ে মায়ের চোখের কোনে জল। গ্রামবাসীরা বলেন তারা এই ভুল আর কখনো করবেন না এরপর থেকে সাপ বা কুকুরে কামড়ালে তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে তারা যাবেন। এই সচেতনতা শিবির নিয়ে খুশি গ্রামের মানুষজন।
ছবি: চিরঞ্জিত বিশ্বাস
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct