ইন্তিখাব আলম: মানব চোখ একটি ইন্দ্রিয় অঙ্গ, সংবেদনশীল স্নায়ুতন্ত্রের অংশ। যে জ্ঞানেন্দ্রিয়ের সাহায্য আমরা বাইরের জগতের দৃশ্য অনুভব করি তাকে চোখ বা চক্ষু বলে। মানুষের চোখ দেখতে গোল বলের মতো হওয়ায় অক্ষিগোলক নামে পরিচিত। চোখকে দর্শনেন্দ্রিয় (organ of origin) বলে। শারীর বিজ্ঞান জানায় মানুষের চোখে ৫৭৬ মেগাপিক্সেল এলাকা পর্যন্ত দেখতে পারে। মানুষের চোখ সোজাসুজি ১২০ ডিগ্রি কোণে দেখতে পাই। একটি সুস্থ মানুষের চোখ ৬০ D (diopter) পাওয়ার থাকে। যার মধ্যে কর্নিয়াতে প্রায় +৪৩ D - +৪৫ D এবং লেন্স প্রায় +১৫ D - +১৭ D পাওয়ার থাকে। একজন সাধারণ ব্যক্তি পড়া বা কাছের বস্তু ২৫ বা ৩০ সেমি থেকে দেখতে হয় এবং দূরের দৃষ্টি অসীম হয়।
চোখের বিভিন্ন অংশগুলি হল -
♦ Eyelids -
চোখের পাতা হল ত্বক, পেশি, টিস্যু দিয়ে গঠিত পাতলা পর্দা। চোখ দুটি উর্ধ্ব পল্লব ও নিম্ন পল্লব দিয়ে ঢাকা থাকে। Eyelid এর কিনারায় এক সারি পল্লব লোম থাকে। সপ্তম ক্রেনিয়াল নার্ভ (Facial nerve) স্নায়ু সরবরাহ করে।
♦ কাজ - চোখকে খুলতে ,বন্ধ করতে,বাইরের ধুলো - বালি ,আঘাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
♦ Eyelids এর কমন রোগ -
১. Triachiasis - চোখের পাতার লোম চোখের বাইরে না গিয়ে আই বলের দিকে প্রবেশ করে এবং কর্নিয়া ও কনজাংটিভাই ঘষা লাগে অস্বস্তি অনুভব হয়।এক্ষেত্রে লোম গুলি তুলে ফেলে, কন্টাক্ট লেন্স,Laser , Cryotherapy মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
২. Blepharitis - এটি চোখের পাতার প্রান্ত বরাবর একটি প্রদাহ। শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটি বেশি লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে চোখ জ্বালা করে, লাল ভাব হয়, চোখ চুলকায়, চোখের পাতা ফুলে যায় ইত্যাদি দেখা যায়। এটির চিকিৎসার জন্য চোখের পাতা পরিষ্কার,গরম সেঁক দিতে হবে, অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ এবং আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।
৩. Chalazion - এটি হলো ছোট ধীরে ধীরে ক্রমবর্ধমান সিস্ট বা পিন্ড যা চোখের পাতার মাঝখানে হয়। এতে ব্যথা হয় না। চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে ও গরম শেক দিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ এবং আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করে চিকিৎসা করা যেতে পারে। সার্জারি করে নিরাময় করতে হতে পারে।
৪. Stye - ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে চোখের পাতার প্রান্তের কাছে একটি লাল, বেদনাদায়ক পিণ্ড ধারণ করে যা ফোঁড়া বা পিম্পলের মতো দেখতে হতে পারে। চিকিৎসার হিসাবে গরম সেক দিতে হবে ,চোখের পাতা পরিস্কার করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ও মলম এবং আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।সার্জারি করে নিরাময় করতে হতে পারে।
♦ Conjunctiva -
এটি eyeball এর একেবারে উপরের দিকে অবস্থিত একরকম স্বচ্ছ পাতলা আবরণ।
♦ কাজ - চোখের অভ্যন্তরীণ অংশকে রক্ষা করে।
♦ প্রকারভেদ - Conjunctiva ৩ প্রকারের হয়। ১. Bulbar Conjunctiva,২. Palpebral Conjunctiva,৩. Fornix Conjunctiva
♦ Conjunctiva কমন রোগ -
১. Bacterial conjunctivitis - স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়। এটিকে ‘গোলাপী চোখ’ ও বলে।এক্ষেত্রে চোখ গোলাপি ভাব, আঠালো স্রাব বের হয়, চুলকানি ও চোখে হালকা ব্যথা হয়। চিকিৎসার জন্য কৃত্রিম অশ্রু ড্রপ এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ড্রপ বা মলম ব্যবহার করতে হবে।
২. Allergic conjunctivitis - অ্যালার্জেন প্রতি কনজাঙ্কটিভার প্রদাহ জনক প্রতিক্রিয়া। অত্যাধিক জ্বর, ফুলের পরাগ, ধুলো, কিছু ঔষধের জন্য এলার্জি হয়। চুলকানি ও লাল ভাব, চোখ ফুলে যায়। অ্যান্টি অ্যালার্জির ড্রপ এবং আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। অতিরিক্ত চুলকালে হালকা ডোজের স্টেরয়েড ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।
৩. Subconjunctival haemorrhage - খুব জোরে কাশি, হাঁচি অথবা বাইরে থেকে কোন কিছুতে আঘাত লাগলে চোখের সাদা অংশে এক বা একাধিক রক্তের গাঢ় জমাট বাঁধা অংশ লাল দেখা যায়,একে subconjunctival haemorrhage বলে। চিকিৎসা হিসাবে গরম বা ঠাণ্ডার চেক দিতে হবে এবং এন্টিবায়োটিক ড্রপ, আর্টিফিশিয়াল টিআর ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।
৪. Pterygium - কনজাঙ্কটিভার মাংসল ঝিল্লির বৃদ্ধি যা কর্নিয়ার উপর চোখের সাদা অংশ ঢেকে যায়। শুষ্ক, ধুলোময় পরিবেশে কাজ করা ব্যক্তিদের বেশি দেখা যায়। চোখে বালি পড়েছে এমন অস্বস্তি,চোখ লাল হয়ে যায়। খুব বেশি বৃদ্ধি পেলে অস্ত্রপচার করতে হবে।
♦ Cornea -
এটি অক্ষিগোলকের সামনের দিকে অবস্থিত স্বচ্ছ স্তর। কর্নিয়ার উপরে কনজাঙ্কটিভা অবস্থান করে। কর্নিয়া ১/৬ তম অংশ তন্তু যুক্ত স্বচ্ছ আবরণী।
♦ কাজ - কর্নিয়া প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
q কর্নিয়ার স্তর- কর্নিয়া কে ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল- এপিথেলিয়াম, বোম্যানস লেয়ার, স্ট্রোমা, প্রি ডেসিমেটস লেয়ার, ডেসিমেট্স মেমব্রেন, এবং এন্ডোথেলিয়াম।
♦ Cornea কমন রোগ -
১. Bacterial corneal ulcer - এটি ব্যাকটেরিয়াল কেরাটাইটিস নামেও পরিচিত যা সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং স্টাফিলকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট কর্ণিয়ার সংক্রমন। কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের জন্য, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া চোখের ঔষধ, অন্তর্নিহিত কর্নিয়ার রোগ, শুষ্ক চোখ, কর্নিয়াল ইনজুরি ইত্যাদি কারণে হয়। চোখ দেখতে ধূসর সাদা, লালভাগ, মিউকোপুরুলেন্ট স্রাব চোখে দেখা যায়। এই রোগের জন্য দ্রুত চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২. Fungal corneal ulcer - কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের জন্য, চাষাবাদ এবং শাকসবজি দ্বারা চোখের উপর আঘাত লাগার কারণে কর্নিয়ায় ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে যার ফলে এই রোগের সৃষ্টি হয়। চোখ থেকে আঠালো স্রাব, লাল হওয়া, চোখ ধূসর রঙের দেখতে হয়ে যায়। এটির চিকিৎসার জন্য দ্রুতচক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
♦ Iris -
এটি কর্নিয়ার নিচে এবং লেন্স, সিলিয়াড়ি বডি সামনে অবস্থিত। মেলানিন নামে রঞ্জক থাকায় এই অংশ নানান রঙ ধারণ করে। আইরিশের ভিতর দুই রকমের ছোট ছোট মাংসপেশী থাকে; একটির নাম স্ফিঙ্কটার পিউপিল যেটি পিউপিল কে ছোট করতে সাহায্য করে, অন্যটি ডায়ালেটার পিউপিল যেটি পিউপিল কে বড় করতে সাহায্য করে। আইরিশ টি গোল না হয়ে খাঁজ কাটার মত হয় এই অস্বাভাবিকতাকে কোলোবোমা বলে। কোলোবোমার কারনে ডবল দেখতে পাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, গ্লুকোমা হতে পারে।
♦ কাজ - আইরিশ তারারন্ধ্র কে ছোট বড় করে চোখে আলো প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।
♦ Pupil -
এটি আইরিশের মধ্যভাগে দেখা যায়। কিছু রোগে বা ঔষধ এ পিউপিল মাপ ছোট হয়ে যায় একে মাইওসিস বলে আবার পিউপিল মাপ বড় হয়ে যায় একে মিড্রিয়াসিস বলে।
♦ কাজ - চোখের মধ্যে যে আলো প্রবেশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।
♦ Lens -
এটি আইরিশের পরবর্তী দ্বী উত্তলাকার সচ্ছ অংশ। দূরের বা কাছের কোন জিনিসের ছবি যাতে রেটিনাতে ঠিকমতো ফোকাস করে তার জন্য লেন্স প্রয়োজনমতো চ্যাপ্টা বা মোটা হয়ে যায়। বয়স কালের জন্য বা অন্য কোন কারণে লেন্সের ওপর স্বচ্ছ ভাব অসচ্ছ হয়ে মেঘলা মতো দেখায়, এই পদ্ধতিকে ছানি বলে। ছানি (Cataract) পড়লে দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয় কিন্তু কাছের দৃষ্টি ঠিক থাকে। ছানি অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক করতে হয়।
♦ কাজ - লেন্স আলোক রশ্মির প্রতিসরণে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে আলোকরশ্মিকে রেটিনার উপর কেন্দ্রীভূত করে।
♦ Choroid -
এটি স্ক্লেরার পরবর্তী আবরণ। কোরোয়েড হল দ্বিতীয় স্তর। এর ভিতর থাকে অনেক রক্তবাহী শিরা ও উপশিরা। রেটিনা ও পাশের জায়গাতে পুষ্টি সরবরাহ করে।
♦ কাজ - কোরোয়েড আলোকের প্রতিফলন রোধ করে এবং রেটিনাকে রক্ষা করে।
♦ Ciliary body -
এটি একটি বৃত্তাকার গঠন,আইরিস এবং কোরোয়েড এর মধ্যে অবস্থিত। সিলিয়ারি বডি জলীয় হিউমর তৈরি করে।
♦ কাজ - লেন্সের উপযোজনে/আকার গঠনে সাহায্য করে।
♦ Retina -
এটি অক্ষিগোলকের পশ্চাদ্ভাগে অবস্থিত করোয়েড স্তরের পরবর্তী অভ্যন্তরীণ স্তর। রেটিনা আলোকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করার জন্য দায়ী যা মস্তিষ্কে চাক্ষুষ তথ্য প্রেরণ করে। রেটিনায় ১২০ মিলিয়ন রড কোষ থাকে যা কম আলোয় অনুভূতিশীল হয় এবং ৬৫ মিলিয়ন কোন কোষ থাকে যা রং চিনতে এবং সম্মুখ দৃষ্টিতে সাহায্য করে। ফোভিয়া চোখের একটি অংশ। ম্যাকুলার মাঝে রেটিনা অংশে এর অবস্থান। বইপড়া, গাড়ি চালনা করা, ইত্যাদি কাজে যে তীক্ষ্ণদৃষ্টির প্রয়োজন, সেসব কাজে ফোভিয়া ব্যবহৃত হয়।
♦ কাজ - রেটিনায় বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়।
♦ Retina স্তর - রেটিনার ১০ টি লেয়ার থাকে।সেগুলি হল- ১.Inner limiting membrane, ২.Nerve fiber layer (NFL), ৩.Ganglion cell layer, ৪.Inner plexiform layer,
৫.Inner nuclear layer, ৬.Outer plexiform layer,
৭.Outer nuclear layer, ৮.Outer limiting membrane, ৯.Layer of rod and cone cells, ১০.Retinal pigmented epithelium.
♦ Retina কমন রোগ -
১. Diabetic retinopathy - এটি ডায়াবেটিসের জটিলতম রোগ। ডায়াবেটিসের জন্য শরীরের সাথে সাথে চোখের ক্ষতি করে। রক্তে সুগারের পরিমাণ অত্যাধিক হলে রেটিনাল্ টিস্যু ফুলে যায় ও দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। রাতে দেখতে অসুবিধা হয়, চোখের সামনে দাগ বা আলোর ঝলকানি দেখা যায়।। চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
♦ Optic nerve -
অপটিক নার্ভ দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় নার্ভ, যেটি চোখের পিছন থেকে শুরু হয় তারপর ভিজুয়াল করটেক্স এ যায় সেখান থেকে বাইরের দৃশ্য দেখতে পাই। এটি নষ্ট হয়ে গেলে চোখের সামনের অংশ ঠিক থাকলেও সঠিকভাবে দেখতে পাবে না।
♦ কাজ - দৃষ্টির সিগন্যাল চোখের রেটিনা থেকে ব্রেনে চলে যায়।
♦ Macula -
ম্যাকুলা হল রেটিনার অংশ যা আমাদের সূক্ষ্ম বিবরণ, দূরবর্তী বস্তু এবং রঙ দেখতে সাহায্য করে।
♦ কাজ - আলোর সংকেত গুলিকে প্রক্রিয়া করে যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে।
♦ Aqueous humor -
কর্নিয়া ও লেন্স এর মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠে দেখতে পাওয়া যায়।
♦ কাজ - চোখের প্রেসার বজায় রাখতে, প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
♦ Vitreous humor -
লেন্স ও রেটিনার অন্তর্বর্তী প্রকোষ্ঠে দেখা যায়।
♦ কাজ - প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
♦ Tear gland -
প্রতি চোখের অক্ষিকোটরের বহির্ভাগে এবং উপরের অক্ষি পল্লবের নিচে ছোট বাদামের মতো দেখতে একটি করে অশ্রুগ্রন্থি থাকে। অশ্রুগ্রন্থির ক্ষরণকে অশ্রু বলে। আমাদের চোখের অশ্রু lacrimal punctum যেটি চোখের নাকের দিকে কোনা থেকে lacrimal canaliculi দিয়ে প্রবেশ করে lacrimal sac এ যাওয়ার পর nasolacrimal duct দিয়ে নির্গত হয়।
♦ কাজ - অশ্রু চোখের উপরিভাগে ধুলোবালি পড়লে তা ধুয়ে দেয় এবং চোখকে ভিজিয়ে রাখে।
♦ Tear drainage হিসাবে কমন রোগ -
Dacryocystitis(DCT) / Dacryocystorhinostomy(DCR) - DCT/DCR হল টিয়ার থলির প্রদাহ বা সংক্রমণ। এটি তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী প্রায়শই জল এবং চোখের কোনা থেকে পূজ বের হয়। আঘাত, টিয়ার নালীতে জন্মগত অস্বাভাবিকতা জন্য হতে পারে। DCT/DCR উপশম করার জন্য টিয়ার নালিকে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। প্রায় ৪০ বা ৪৫ বছর বয়সের নিচে হলে DCR এবং প্রায় ৪০ বা ৪৫ বছর বয়সের উপরে হলে DCT অপারেশন করতে হয়।
♦ বর্তমানে প্রচলিত রোগ -
♦ Dry eye - চোখের শুকনো ভাব অর্থাৎ চোখে জলের অভাব। গরম আবহাওয়া, চোখে জলীয় ভাব কম, কন্টাক লেন্সের ব্যবহার ইত্যাদির জন্য Dry eye হয়। আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করে ঠিক রাখা যায়।
♦ Glaucoma - গ্লুকোমা হলো চোখের এক প্রকার রোগ যাতে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও চোখ অন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে ঝাপসা দৃষ্টি, ঘন ঘন চশমা গ্লাস পরিবর্তন ইত্যাদি হলে লক্ষণ ধরা যায়। রোগটি ধরা পরলে যতটা দৃষ্টি থাকবে ততটা ঠিক রাখার জন্য অ্যান্টিগ্লুকোমা ড্রপ ব্যবহার করেই যেতে হবে এবং দ্রুত চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই রোগটি বংশগত রোগ অবশ্যই বাড়ির একজনের হলে অন্যান্য বাড়ির সদস্যদের রুটিন চেকআপে থাকতে হবে।
♦ Extra ocular muscle -
আমাদের চোখ দিয়ে চারিদিকে তাকানোর জন্য সাহায্য করে কিছু মাসল যাকে Extra ocular muscle বলে। চোখে ছয়টি মাংসপেশি থাকে সেগুলি হল - ১.Medial rectus: Moves the eye inward, toward the nose , ২.Lateral rectus: Moves the eye outward, away from the nose, ৩.Superior rectus: Moves the eye upward, ৪.Inferior rectus: Moves the eye downward,
৫.Superior oblique: Rotates the top of the eye toward the nose, ৬.Inferior oblique: Rotates the top of the eye away from the nose.
3rd(Oculomotor nerve),4th(Trochlear nerve),6th(Abducent nerve) cranial nerve এক্সট্রা অকুলার মাসল এ নার্ভ সাপ্লাই করে।
♦ Accommodation -
আকোমোডেশন হল চোখের কাছের এবং দূরের বস্তুকে ফোকাস করার ক্ষমতা। লেন্সের আকৃতি পরিবর্তন করে, চোখের বলের অক্ষিয় দৈঘ্য পরিবর্তন করে, কর্নিয়ার আকৃতি পরিবর্তন করে বস্তুর প্রতি ফোকাস করা হয়।
♦ Refractive error (প্রতিসরণ ত্রুটি) -
Emmetropia হল প্রতিসরণ ত্রুটি ছাড়া নরমাল চোখ ( চশমা ছাড়া)। আবার Ametropia হল চোখে প্রতিসরণ ত্রুটি উপস্থিত থাকে। প্রতিসরণ ত্রুটি গুলি হল -
১. Myopia / short sightedness - দূর থেকে আগত আলোকরশ্মি রেটিনার উপর না পড়ে রেটিনার সামনে ফোকাস করে, একে myopia বলে। এতে দূরে থাকা বস্তুগুলি পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা হয়।, কিন্তু কাছের বস্তু পরিষ্কার দেখা যায়। অবতল (Concave) লেন্স এর চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে দৃষ্টি ঠিক রাখা হয়। আবার সার্জারি করে ও ঠিক করা যেতে পারে।
২. Hypermetropia / far sightedness - দূর থেকে আগত আলোকরশ্মি রেটিনার উপর না পড়ে রেটিনার পিছনে ফোকাস করে, একে hypermetropia বলে। এতে দূরের বস্তু পরিষ্কার দেখা যায় এবং কাছেরটা অস্পষ্ট হয়। উত্তল (Convex) লেন্সের চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে দৃষ্টি ঠিক রাখা হয়। আবার সার্জারি করেও ঠিক করা যেতে পারে।
৩. Astigmatism - এটি মায়োপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়ার সঙ্গে ঝাপসা দৃষ্টি বোঝায় যখন কর্নিয়া ও লেন্সের আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন হয়, তখন astigmatism বা দৃষ্টিকোণ দেখা যায়। সিলিন্ডার লেন্স এর চশমা ব্যবহার করতে হবে। সার্জারি করেও ঠিক করা যায়।
৪. Presbyopia - প্রেসবায়োপিয়া হল বয়স জনিত ত্রুটি। সাধারণত ৪০ বয়সের পর লেন্সের নমনীয়তা হ্রাস পায়, সিলিয়ারী পেশি গুলি দুর্বল হয়ে যায় ও কর্নিয়ার কার্ভেচার বেড়ে যায় যার ফলে কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা হয়।একে বাংলায় চালসে বা চল্লিশা বলে। চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে অথবা সার্জারি সাহায্য ঠিক করা যেতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct