সজিবুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: গত এক দশক ধরে সংখ্যালঘু, দলিত, উপজাতি এবং বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করে একটি বিভাজনমূলক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিজেপি শাসিত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির নীতি সুস্পষ্টভাবে বৈষম্যমূলক। মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানোর প্রচেষ্টা এবং ধর্মীয় বিদ্বেষের পরিবেশ তৈরি করে গণপিটুনি ও সম্পত্তি ধ্বংসকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, আসাম এবং দিল্লিতে মুসলিমদের ঘরবাড়ি ও ধর্মীয় স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রাচীন মসজিদ, মাদ্রাসা, দোকানপাট ধ্বংসের ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার মুসলিমদের ওয়াকফ সম্পত্তি অধিকার কেড়ে নিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করতে চলেছেন। দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও বিজেপি সরকার যৌথ সংসদীয় কমিটিতে এই বিল পাশ করিয়ে লোকসভায় পেশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, বিহার, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক রাজ্যে প্রতিবাদ হয়।
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার তাতিবাগান, নদিয়ার নাকাশিপাড়া, বীরভূমের লোহাপুর, মুর্শিদাবাদের রানীনগর, হরিহরপাড়া, ডোমকল, লালগোলা, সাগরদিঘী, রঘুনাথগঞ্জ, সামসেরগঞ্জ এবং সুতিতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নেতা কর্মীরা ওয়াকফ বিলের প্রতীকী কপি পুড়িয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কুশপুতুলও দাহ করা হয়।
রাজ্য সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক সুমন মন্ডল রানীনগরে উপস্থিত হয়ে বলেন, “ওয়াকফ সংশোধনী বিল মুসলিমদের অধিকার হরণ এবং সম্পত্তি ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং বিলটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”
অন্যদিকে রাজ্য সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম হরিহরপাড়ার বিক্ষোভে বলেন, এই বিল গণতন্ত্রের বিরোধী। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সরকারের এই ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না। প্রতিবাদ আরও জোরদার হবে।”
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct