আপনজন ডেস্ক: মালয়েশিয়া বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সম্পর্কিত আইন শিথিল করতে সম্মত হয়েছে, যার মধ্যে অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করার সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি দীর্ঘদিন ধরে অধিকারকর্মীদের জন্য একটি বিতর্কিত বিষয় ছিল, যারা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এদিন পার্লামেন্টে জানান, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আইনের একটি বিধান, যা বিক্ষোভের আয়োজনের জন্য পূর্বানুমোদনের শর্তারোপ করেছিল, সেটি বিলুপ্ত করা হবে। পুলিশ প্রায়ই এই নিয়মকে বিক্ষোভ বন্ধ করার কারণ হিসেবে ব্যবহার করত। তারা দাবি করত, স্থানীয় সম্পত্তির মালিকদের অনুমতি না থাকলে সমাবেশ করা যাবে না। কিন্তু বৃহস্পতিবার আনোয়ার ঘোষণা করেন, ‘এখন থেকে অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু পুলিশের কাছে পাঁচ দিন আগে নোটিশ দিলেই চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য এই নিয়ম করা হয়েছিল। তিনি নিজেও একজন অভিজ্ঞ বিক্ষোভকারী ছিলেন।
পাশাপাশি তিনি বলেন, সমাবেশের স্থান সম্পর্কেও ‘আরো নমনীয়তা’ দেখানো হবে, যদি না সেই স্থানগুলো নিরাপত্তার জন্য সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে অস্ত্রসহ বিক্ষোভ বা শিশুদের অংশগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আইন দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার এনজিও ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয় ছিল। কারণ এই আইনের মাধ্যমে অনেক সময় বিক্ষোভ ও সমাবেশ আয়োজন করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেকেই এই আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন। এই আইনের অধীনে অংশগ্রহণকারীদের, এমনকি আনোয়ারসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও অনুমোদনহীন সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য প্রায়ই তলব করা হতো এবং তদন্তের মুখোমুখি হতে হতো। ২০১২ সালে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছিল, যখন তারা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সরকারের কাছে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছিল। তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন আনোয়ার, যিনি নিজেও ওই সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২২ সালে আনোয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct