সুলেখা নাজনিন , কলকাতা, আপনজন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের রাজ্যে বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ বাড়ল ৭২ কোটি টাকারও বেশি। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বুধবার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫,৬০২.২৯ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ছিল ৫৫৩০.৬৫ কোটি টাকা। আর
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ছিল ৫১১৬.৯৯ কোটি টাকা। বুধবার ২০২৪-২৫অর্থ বর্ষের বাজেটে বরাদ্দের জন্য দাবিসমূহের অন্তর্গত দফতর ওয়ারি প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ পুস্তিকায় সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে বরাদ্দের সবিস্তার তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রধান খাতে ২০২৪-২৫ বর্ষে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪৭ কোটি ৯৮ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা হয় ৫০ কোটি ৫২ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ বর্ষে তা করা হয়েছে ৫২ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা।
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের জন্য ১৬২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের জন্য ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ বর্ষে জেলায় সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের হস্টেল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ৭৬ লক্ষ ৩ হাজার টাকা। তা বাড়িয়ে ২০২৫-২৬ বর্ষে করা হযেছে ৩ কোটি ১১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ট্যালেন্ট সাপোর্ট খাতে ও কম্পিউটারাইজেশনের জন্যও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। গত অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১২০১ কোটি টাকা। এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪৮২ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের স্কুল ইউনিফর্ম, জুতোর জন্য বরাদ্দ ৮০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। মাদ্রাসার ছাত্রীদের উৎসাহ ভাতা খাতে এবার ২ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২২ কোটি টাকা করা হয়েছে। উর্দু ভাষার প্রসারের জন্যও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। উর্দু ভাষার প্রসারের জন্য বরাদ্দ ছিল ১৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এবার তা বাড়িয়ে ১৯ কোটি ৪২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। জৈন সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের বৃত্তির জন্য এবারও ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আন এডেড মাদ্রাসায় বিজ্ঞান সামগ্রী সহ সহায়তায় জন্য ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পাহাড়িয়া সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের জন্য বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা।
পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ডের জন্য গত অর্থবর্ষে বরাদ্দ ছিল ১৬২ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২২১ কোটি ৮৭ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। ওয়াকফ বিল্ডিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে ২১ কোটি টাকা।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের জন্য ৪২, কারমাইকেল ও বেকার হস্টেলের সংস্কার ও বর্ধিতকরণের জন্য ৬৩ লক্ষ টাকা। সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের সাইকেল দেওয়ার জন্য গত বছর রিভাইসড বাজেট বরাদ্দ ছিল ২২০ কোটি টাকা। এবার তা একই রাখা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হজ কমিটির জন্য ২ কোটি ৭৬ লক্ষ ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি ৮ লক্ষ ২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য গত অর্থ বর্ষে বরাদ্দ ছিল ১০৫ কোটি টাকা। রিভাইসড বাজেটে তা করা হয় ৭৫ কোটি টাকা। এবার তা করা হল ৯৬ কোটি ৫৪ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে ৭৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা থেকে করা হয়েছে ৫০ লক্ষ ২ হাজার টাকা। গত অর্থবর্ষে পরিত্যক্ত মুসলিম মহিলাদের আবাসন সহ বিভিন্ন খাতে ৩২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। রিভাইসড বাজেটে তা কমিয়ে করা হয়েছিল ৫৫ কোটি টাকাল ২০২৫-২৬ বর্ষে তা করা হয়েছে ২৭২ কোটি টাকা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct