আপনজন ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আট বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েচে। এ ঘটনা দেশের জনগণকে হতবাক করে দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ৪০ বছর বয়সী ওই নারী শিক্ষিকা কেন্দ্রীয় শহর ডেইজিওনে ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতের কথা স্বীকার করেছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় একটি স্কুল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় মেয়েটিকে পাওয়া যায় এবং হাসপাতালে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ওই শিক্ষিকাকে আহত অবস্থায় শিশুটির পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, তিনি নিজেই নিজের শরীরে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক মঙ্গলবার এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং কর্তৃপক্ষকে ‘এই ধরণের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের’ আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার বন্ধ থাকা স্কুলের গেটে অনেকে ফুল ও কার্ড নিয়ে জড় হয়েছিলেন। গত ৯ ডিসেম্বর বিষণ্ণতার কারণে ওই শিক্ষিকা ছয় মাসের ছুটির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ডেইজিওন শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, ডাক্তার তাকে কাজের জন্য উপযুক্ত বলে মূল্যায়ন করার পর ছুটির মাত্র ২০ দিন পরে তিনি স্কুলে আবার ফিরে আসেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহত ছাত্রীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না।
ছুরিকাঘাতের কয়েকদিন আগে শিক্ষিকা আচরণে কিছু পরিবর্তন দেখা গেছে। ছুরিকাঘাতের ঘটনার তদন্তের জন্য সোমবার শিক্ষা অফিসের দুই কর্মকর্তা স্কুলটি পরিদর্শন করেন। সোমবার সন্ধ্যায় বাস চালক স্কুলে জানানোর পর থেকে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। বাস চালক স্কুলে জানান যে, সেদিন তাকে তুলতে আসেনি। পুলিশ আরো জানিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হওয়ার পরও শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত থাকবে।
এর আগে সহকর্মীর ওপর হামলার পর শিক্ষা অফিস সুপারিশ করেছিল, এই শিক্ষিকাকে ছুটিতে পাঠানো হোক এবং অন্য শিক্ষিকা থেকে তাকে আলাদা করা হোক।
এরপর তাকে উপাধ্যক্ষের ডেস্কের পাশে বসিয়ে রাখা হয়েছিল যাতে তাকে কড়া নজরে রাখা যায়। ডিসেম্বরে ছুটির পর থেকে তিনি কোনো ক্লাসও পড়াননি এবং আট বছর বয়সী ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না বলে কর্মকর্তারা বলেন।
দক্ষিণ কোরিয়া সাধারণত একটি নিরাপদ দেশ, যেখানে কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছুরিকাঘাতসহ বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল অপরাধের ঘটনা ঘটে দেশটিতে।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি চোই বলেছেন, ‘এই ধরনের ঘটনা দেখে আমার কষ্ট হয়। কারণ স্কুল আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হওয়া উচিত। আমি ভুক্তভোগীর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই, যারা প্রচণ্ড শোক ও যন্ত্রণা ভোগ করেছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct