আপনজন: খাস নবাব তালুকে চলছিল প্রতারণার নতুন ফাঁদ তৈরি। প্রতারিত গ্রাহকরা মুর্শিদাবাদ শহরের একটি হোটেলে হাতেনাতে পাকড়াও করলেন ১২ জনকে। পরে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতার ঘুঘুডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা পল্লব চক্রবর্তী প্রায় ২৫ বছর আগে ২০০০ সাল নাগাদ একটি চিটফান্ড সংস্থা তৈরি করে কয়েক হাজার মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে ২০১২ সালে হঠাৎ করেই বেপাত্তা হয়ে যায়। তখন সেই চিটফান্ড সংস্থার নাম ছিল মাল্টিপারপাস বায়োজ ইন্ডিয়া লিমিটেড। ইদানিং সেই পল্লব আবার ইনোমার্স নামের একটি নতুন কোম্পানির ডিরেক্টর সেজে এলাকায় টাকা তুলতে শুরু করেছিল। মুর্শিদাবাদের ইচ্ছাগঞ্জের বাসিন্দা রবিউল শেখের কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা, শহরের বাসিন্দা রাহুল শেখ, বাদল শেখ, সানি শেখ দের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে ৬ লক্ষ টাকা তুলে ইনোমার্স সংস্থায় জমা করেছিল পল্লব।
এই বিষয়ে টাকা জমা করা গ্রাহকরা বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল পাঁচ বছরে টাকার ডবল দেওয়া হবে। আর ওই টাকা জমা করার জন্য সিকিউরিটি হিসেবে পলসন্ডা এলাকার একটি জমির বন্ড দেয় কোম্পানি। সংস্থার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকার পণ্য ক্রয় করা হলে উপভোক্তাকে ২২৫ দিনে ১ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে, এধরনের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন কায়দায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টাকা তুলতে শুরু করে ইনোমার্স নামের ওই সংস্থাটি।
মুর্শিদাবাদ টাঙ্গা ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখ বলেন, আমিও পল্লব চক্রবর্তীর ফাঁদে পড়েছিলাম। তখন তিনি মাল্টিপারপাস বায়োজ ইন্ডিয়া লিমিটেড নামের একটি মানি মার্কেটিং সংস্থা চালাতেন। ওই সময় আমি সহ কয়েক হাজার এজেন্ট ওর চক্রান্তে পড়ে সর্বস্বান্ত হই। অনেক এজেন্ট মানুষের হাত থেকে বাঁচতে আত্মহত্যা করে। পরে খবর পাই সেই পল্লব বাজারে নতুন প্রতারণার জাল বিছিয়েছে।”
বুধবার রাতে জেলার ১১ জন এজেন্টকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি সংলগ্ন একটি হোটেলে আলোচনা করছিল পল্লব। ওই সময় মনু শেখ স্থানীয় মানুষজন নিয়ে হোটেলে তাদের পাকড়াও করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ পৌঁছে ওই ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রবিউল শেখ, মনু শেখ সহ অন্যান্যরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ধৃতদের লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৫ জনকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বাকিদের জেল হেফাজতে রাখা হয়।
প্রতারণার ছক কষতে গিয়ে নবাবের শহর থেকে পাকড়াও হল ওই প্রতারণা কান্ডের চক্রীরা। তদন্ত শুরু করেছে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct