নকিব উদ্দিন গাজী , মথুরাপুর, আপনজন: স্কুল ঘর আছে ছাত্রছাত্রী আছে শিক্ষকের অভাবে বন্ধের মুখে সুন্দরবনে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার এমনটাই ছবি দেখা গেল।দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের কুমড়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ পুকুর এলাকায়।
সুন্দরবন আদিবাসী এলাকায় এম এস কে অর্থাৎ মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষা কেন্দ্র ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ৬ শিক্ষক নিয়ে, রাজ্য শিশু শিক্ষা মিশনের তত্ত্বাবধানে ব্লক অফিসের উদ্যোগে চলে স্কুলটি ।
মূলত সংখ্যালঘু এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এই স্কুল তৈরি হয় এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য। প্রথম থেকেই ছাত্রছাত্রীর সংখ্যায় ছিল ২ শতর উপরে। ধীরে ধীরে পড়াশোনার মান উন্নতি করে বহু ছাত্র-ছাত্রী এই স্কুল থেকে পাস করে শিক্ষক ইঞ্জিনিয়ার বা ভাল জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু সেই স্কুলের শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবার মুখে। এটা ভাবতে অবাক লাগছে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের।
বর্তমানে স্কুল প্রায় ১৮০ জন ছাত্রছাত্রীর একজন শিক্ষক নিয়ে কোনরকম চলছে। অবশ্যয় খাতা কলমে দুজন শিক্ষক থাকলেও, আগামী এপ্রিল মাসে অবসর গ্রহণ করবেন সহকারী শিক্ষক পঞ্চু রাম মন্ডল। এলাকার যারা তফসিলি জাতীর উপজাতি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা কোথায় পড়তে যাবে? প্রশ্ন অভিভাবকদের ।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের অভিভাবকরা স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে শিক্ষা না থাকলে আবারও অন্ধকারের দিকে চলে যাবে এই সমাজ অন্ধকার থেকে শিক্ষার আলোর জন্য স্কুলের জন্য জায়গা দিয়েছিল আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। এই স্কুল হতেই আদিবাসী সমাজের মধ্যে শিক্ষার মান উন্নত হয়, তাদের সম্প্রদায়ের মেয়েরা আজ স্নাতক হতে পেরেছে। অগামি দিনে শিক্ষকের অভাবে পাঁচপুকুর জ্যোতিষ চন্দ্র আদিবাসী মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে আদিবাসী সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের স্থানীয় মানুষের শিক্ষার হার কমে যাবে এমন অভিযোগ তোলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌরেন্দ্রনাথ হালদার জানান এই স্কুলটি ২০০২ সাল থেকে চলছে, পরপর শিক্ষক অবসর হয়ে যাচ্ছেন কিন্তু কোন নিয়োগ হচ্ছে না, তার ফলে বর্তমানে আমি আছি আমার সাথে একজন সহকর্মী শিক্ষক আছে কিন্তু তিনি আগামীদিনে অবসর হয়ে যাবেন, তার ফলে আমি একই ক্লাসরুমে দুটি করে ক্লাস করাচ্ছি দক্ষিণ দিকে মুখ করে এবং উত্তর দিকে মুখ করে। আরো কিছু শিক্ষক নিয়োগ হলে আমাদের স্কুলটি সুন্দরভাবে চালানো যাবে। অন্যদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ একটি শিক্ষক থাকার কারণে পড়াশোনার গুন ভালো হচ্ছে না,তাই স্থানীয়দের দাবি স্থানীয়দের দাবি স্কুলে আরো শিক্ষক নিয়োগ করা হোক।
যদি না এই শিক্ষক নিয়োগ হয় তাহলে আগামী দিনে এই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাবে আবারও অশিক্ষার অন্ধকারে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সহ অন্যান্য মানুষরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct