জিয়াউল হক , চুঁচুড়া, আপনজন: হাঁটুর নীচ থেকে দুটো পা বাদ গেছে ট্রেন দুর্ঘটনায়। ভিক্ষা করে চলে দিন। কিন্তু তারই আড়ালে চুরি ছিনতাই করত বলে অভিযোগ। ব্যান্ডেলের সেই কুখ্যাত দুষ্কৃতী ছট্টু পান্ডেকে এবার খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল চুঁচুড়া আদালত।
২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর। ব্যান্ডেল স্টেশন রোডে ওভার ব্রিজের কাছে মদের ঠেকে বচসার সময় রিক্সা চালক রামদাস মাঝিকে (৩০) ছুরি মেরে খুন করার অভিযোগ ওঠে ছোট্টু ওরফে মঙ্গল পান্ডের বিরুদ্ধে। রামদাসের পেটে পাঁজরে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই মৃত্যু হয় রামদাসের।
পরদিন রামদাসের ভাই শ্যাম মাঝি চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার শের আলি মণ্ডল। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পর ঘটনাস্থলে পাশে থাকা একটি গুমটি থেকে রক্তাক্ত চুরিটিও উদ্ধার করা হয়। তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয় আদালতে। ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি ৩০২ ধারায় চার্জ গঠন হয়। চুঁচুড়া আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় শর্মার এজলাসে শুরু হয় মামলার বিচার পর্ব। ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
গত বুধবার আদালত দোষী সাব্যস্ত করে অভিযুক্তকে। শুক্রবার তাকে সাজা শোনানো হয়। হুগলি জেলা মুখ্য সরকারি আইনজীবী শংকর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। দশ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেলের সাজা।”
যার দুটো পা নেই এরকম একজন মানুষও কীভাবে এমন ভয়ঙ্কর অপরাধী হতে পারেন তা দেখে অবাক পুলিশ আধিকারিকরাও। জানা গেছে, হাঁটতে না পারলেও খুব ভালো জাম্প করতে পারে ছোট্টু। সাজা ঘোষণার পর ছোট্টু নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct