আপনজন ডেস্ক: ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেটের সেরা দ্বৈরথগুলোর একটি। ক্রিকেট মাঠে এই দুই দেশের লড়াই খেলার চেয়েও যেন বেশি কিছু। তবে কালক্রমে এই দুই দেশের লড়াইয়ের উত্তাপ যেন কিছুটা কমে এসেছে। আগের মতো সেই কথার লড়াই ও এক দলের আরেক দলকে হুমকি দেওয়ার বিষয়গুলো এখন আর দেখা যায় না।
মাঠে, বিশেষ করে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে খেলার সময় আগের সেই যুদ্ধংদেহী মনোভাবটা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ বিষয়টি একেবারেই মানতে পারছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটার মঈন খান।
সম্প্রতি পাকিস্তানি অভিনেত্রী ও ইউটিউবার উশনা শাহর সঙ্গে এক পডকাস্ট আলাপে নিজের বিরক্তির কথা খোলামেলাভাবেই বলেছেন মঈন। পাকিস্তানের সাবেক উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানের মতে, প্রতিপক্ষের সঙ্গে এমন বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ভুল বার্তা দেয় এবং প্রতিপক্ষকে চড়াও হওয়ার সুযোগ করে দেয়।
মাঠে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা দুঃখজনক উল্লেখ করে মঈন বলেছেন, ‘আমাদের সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টা এমন ছিল যে অধিনায়ক এবং সিনিয়র খেলোয়াড়েরা কথা বলতেই নিষেধ করতেন। কিন্তু এখনকার বিষয়গুলো দেখলে আমার আফসোস লাগে। ভারতের খেলোয়াড়দের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, তাদের দল যে অসাধারণ সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন আমাদের দল তাদের চেয়ে ওপরে ছিল।’
মঈন এরপর যোগ করেন, ‘এখনো ওয়ানডেতে জয়ের ব্যবধানের দিকে তাকালে আপনারা সেটা দেখবেন। তখনকার ধারাটাই এখনো চলে আসছে। সে সময় ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাদের কাছাকাছি আসতে চাইত। কিন্তু এমন নয় যে কোনো খেলোয়াড় মাঠে আসছে আর আমি গিয়ে তার ব্যাট হাতে নিয়ে দেখব। এটা কিন্তু ভুল বার্তা দেয়। এর মধ্য দিয়ে অন্য দল আপনার ওপর আধিপত্য বিস্তার করে। ওরা ভাবে, আরে এদের তো মানসিক শক্তি অনেক কম।’
মাঠে অতিরিক্ত বন্ধুত্ব প্রতিপক্ষকে অন্য রকম সুযোগ করে দেয় উল্লেখ করে মঈন এরপর বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করার জন্য যে মানসিকতা দেখানো দরকার, সেটাকে আপনি যদি নিচে নামিয়ে আনেন, তবে আপনি তাকে নিজের দুর্বলতা দেখিয়ে দিচ্ছেন। এরপর সে–ই আপনার ওপর চড়াও হবে।’
বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা যে বিরক্ত, সেটা বোঝাতে গিয়ে কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামের প্রসঙ্গও নিয়ে আসেন মঈন, ‘আমার যেখানে সুযোগ হয়েছে, আমি সব সময় খেলোয়াড়দের বলেছি। আর এই কথা আমাকে ওয়াসিম আকরামও বলেছেন। তিনি সমালোচনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, “আরে, ওরা গিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাট হাতে নিয়ে দেখে, তাদের সঙ্গে গিয়ে হাসতে হাসতে কথা বলে।” কিন্তু ভারত বা যে দলই হোক, আপনাকে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে হবে। আপনি কথা না বলেন, কিন্তু শরীরী ভাষা তো অন্তত দেখাবেন।’
পাকিস্তান–ভারত অবশ্য এই মাসেই আবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ক্রিকেট মাঠে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে দল দুটি। এখন মঈনের কথা শুনে সেই লড়াইয়ে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আগ্রাসী রূপে হাজির হন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct