আপনজন ডেস্ক: ডি আর কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর গোমায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩ গতকাল মঙ্গলবার শহরের বিমানবন্দর দখলে নিয়েছে। এর ফলে সহায়তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর প্রধান পথ এই বিমানবন্দর, ফলে বহু বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবনযাত্রা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার গোমা দখলের পর শহরের রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ২০১২ সালের পর এটিই এম২৩ বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় অগ্রগতি। এই সংঘাতের মূল কারণ রুয়ান্ডার গণহত্যার প্রভাব ও কঙ্গোর খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণের লড়াই। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক জানান, বিদ্রোহীরা বিমানবন্দর ও গোমা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তিনি শহরের পরিস্থিতিকে ‘উত্তপ্ত ও পরিবর্তনশীল’ বলে বর্ণনা করেছেন। অস্ত্র ছড়িয়ে পড়ায় শহরে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী এবং কর্মীদের তাদের ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছে। কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় বিদ্রোহীরা জাতিসংঘের কার্যালয় ও রুয়ান্ডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে। তারা বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। লুটেরা কেনিয়ার দূতাবাসে লুটপাট চালায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দূতাবাসের কর্মীদের কঙ্গো ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ও কঙ্গো সরকার দাবি করেছে, রুয়ান্ডার সেনারা এম২৩ বিদ্রোহীদের সমর্থন করছে। তবে রুয়ান্ডা সরাসরি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেনি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কঙ্গো ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং রুয়ান্ডাকে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গোমা শহর পূর্ব কঙ্গোর সংঘাত থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি প্রধান আশ্রয়স্থল। বিদ্রোহীদের অগ্রগতির কারণে হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পালাচ্ছে। রুয়ান্ডা সীমান্তে গোমা থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের ভিড় বাড়ছে।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, গোমার চারটি প্রধান হাসপাতালে রবিবার থেকে অন্তত ৭৬০ জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা অনুমান করা যাচ্ছে না, কারণ অনেকেই হাসপাতালের বাইরে মারা যাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct