সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: কুল না আপের বোঝাই দায়। আর স্বাদের তো তুলনায হয় না। এমনই আপেল কুল চাষ করে স্বনির্ভরতার পথে ওন্দার গোগড়া গ্রামের জীবন কৃষ্ণ পাল। এই মুহূর্তে বহু পরিচিত ‘নারকেল কুল’কে পিছনে ফেলে বাজার দাপাচ্ছে জীবন কৃষ্ণের আপেল কুল। দাম যেমন বেশী, তেমনই চাহিদাও।
প্রান্তিক কৃষি পরিবারে জন্ম গোগড়া গ্রামের জীবন কৃষ্ণ পালের। ‘৯৮ সালে মাধ্যমিক পাশ, তখন থেকেই লেগে পড়েন পারিবারিক জমিতে চাষের কাজে। চাষ আর পড়াশুনা সমান্তরালভাবে চালিয়ে বিষ্ণুপুর রামানন্দ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর, আর তারই ফাঁকেই খোঁজ পান এই আপেল কুলের। সুদূর নদীয়া থেকে এই আপেল কুলের সাড়ে চারশো চারা এনে নিজেদের আড়াই বিঘা জমিতে বসান। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। গাছ লাগানোর পরের বছর থেকেই লাভের অঙ্ক ঘরে ঢুকতে থাকে। এখন বছরে কয়েক লক্ষ টাকা রোজগার এই আপেল কুল থেকেই। এর পাশাপাশি পেয়ারা, ড্রাগন, লেবু, কাঁঠাল সহ অন্যান্য মরশুমী ফলের এ ফলে গাছ তো আছেই।
কুল চাষী জীবন কৃষ্ণ পাল বলেন, এই কুল চাষে খরচ কম, লাভ বেশী। এক ভাগ্নের মাধ্যমে যোগাযোগ করে নদীয়া থেকে কুলের চারা নিয়ে আসি। বর্তমানে প্রতিটি গাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি ফলন পাচ্ছি, এবং বর্তমানে এই আপেল কুলের পাইকারী বাজার মূল্য ৬৫ টাকা প্রতি কেজি। ফলে ধানের তুলনায় এই কুল চাষে লাভ অনেক বেশী বলেই তিনি জানান। প্রতিবেশী প্রশান্ত নন্দী বলেন, এখন কুল সহ অন্যান্য বিকল্প চাষে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। রাজ্যের উদ্যান পালন দপ্তর থেকে ব্লক কৃষি বিভাগ প্রত্যেকের যথেষ্ট সহযোগীতা মেলে। সঙ্গে এই চাষে ঝুঁকিও যথেষ্ট কম। সেকারণেই এই ধরণের বিকল্প চাষের দিকে চাষীদের আরও বেশী আগ্রহী হওয়া দরকার বলে তিনি জানান।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বরুপা সেনগুপ্ত বলেন, খুব কম জলে এই কুল চাষ করা সম্ভব, সঙ্গে অত্যন্ত লাভজনক চাষ তো বটেই। এই চাষে চাষীদের আগ্রহী করে তুলতে সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বীজ, কীটনাশক সহ অন্যান্য দ্রব্য সরবরাহ করা হয়। ফলে এখন তারাও এই বিকল্প চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে তিনি জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct