আসিফ রনি , নবগ্রাম, সারিউল ইসলাম , মুর্শিদাবাদ, আপনজন: শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২৫ সালের জন্য ১৩৯জন পদ্ম সম্মানের তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে পদ্মবিভূণ ৭জন, পদ্মভূষণ ১৯জন ও ১১৩জন পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মান। সেই তালিকায় পশ্চিমবাংলা েথকে স্থান পেয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বহরমপুরের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামী প্রদীপ্তানন্দ যিনি কার্তিক মহারাজ নামে পরিচিত। এই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে বেলডাঙ্গা দাঙ্গায় ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ উঠেছিল। তার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরিও। কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গাবাজের’ তকমার অভিযোগের মধ্যেই এবার তার মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার হিন্দুদের বাড়িতে অস্ত্র রাখার কথা বলেছিলেন। এবার বাড়িতে তীর ধনুক রাখার নিদান দিলেন কার্তিক মহারাজ। মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে একটি ধর্মীয় সমাবেশ থেকে কার্তিক মহারাজের এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
শনিবার সনাতন সংস্কৃতি সংসদ সংগঠনের পক্ষ থেকে এক ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কার্তিক মহারাজ। তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন রামচন্দ্রকে ধনুর্বাণ ধরতে হয়েছিল রাবণের বিরুদ্ধে, রাবণকে নিধন করেছিল। যারা জয় শ্রীরাম বলবেন তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে হাতে তীর ধনুক রাখার সংকল্প করতে হবে, তবে জয় শ্রীরাম বলা মুখে শোভা পাবে।
অন্যদিকে এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে এপিডিআর মানবাধিকার সংগঠনের জেলা সম্পাদক রাহুল চক্রবর্তী বলেন, মানবাধিকার সংগঠন হিসাবে এই মতামতের আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি মানুষকে সশস্ত্র করবার যে প্রচেষ্টা। জয়শ্রী রামের নামে এবং সাধারণ মানুষ কে ক্রমশ ভিন্ন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটা ক্ষেপিয়ে তোলা হচ্ছে এবং তারই ভিত্তিতে এসব অস্ত্র রাখার কথা বলা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।
অন্যদিকে এই নিয়ে নবগ্রামের বিধায়ক কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, উনি কি রামচন্দ্রের পূর্বসূরী ? সমাজ এ ধরনের কথা মেনে নেবে না। তীর ধনুক নিয়ে সিধু কানু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এবং সেটা একটা ইতিহাস। একটা ধর্মীয় উন্মাদনা দিয়ে নবগ্রামের নির্বাচন করতে চাইছে, ধর্মের উন্মাদনা তৈরি করতে চাইছে। গীতার মূল কথা সব ধর্মের মানুষকে ভালোবাসা। আর এটাই হচ্ছে ভারত বর্ষ। কোন জায়গায় যদি কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটে, তাহলে এই মহারাজের মানুষ এমন বিচার করবে সেদিন মহারাজ এই শুধু জেলা থেকে নয় রাজ্য থেকেও পালিয়ে বাঁচতে পারবে না। এবং আগামীতে সেই দিন আসছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে মুর্শিদাবাদ রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সভামঞ্চ থেকে কার্যত সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বীজ রোপণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, নন্দীগ্রামে হিন্দুদের এককাট্টা করে ভোটে জিতেছি। মুসলিমরা আমাকে ভোট দেয়নি। মুর্শিদাবাদ-মালদার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সংখ্যাগুরু মুসলিমদের সুরক্ষায় থাকতে হবে, আমরা মেনে নেব না। সংখ্যায় কম বলে ভয় পাবেন না, লড়াই করবেন। লালবাগে যেভাবেই হোক হিন্দু জনসংখ্যা বাড়িয়ে তুলুন। দেশের ১৪০ কোটি ভারতীয় জেলার ২৮ শতাংশ হিন্দুর সাথে আছে। ভারত হিন্দু রাষ্ট্র তৈরি হবে, এটাই আমার স্বপ্ন। জোট বাঁধুন, তৈরি হন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct