সুভাষ চন্দ্র দাশ , বাসন্তী, আপনজন: হবৃহষ্পতিবার সাত সকালে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো একটি অঙ্গনওয়াড়ি শিশু কেন্দ্র।ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি শিশু কেন্দ্রের রাঁধুনি সুধা সরদার,অভিভাবিকা গৃহবধু সারথী সরদার সহ স্বর্ণদ্বীপ সরদার(৮ মাস),তানিসা মোল্লা(৪বছর),সুলতানা মোল্লা(৩ বছর),খাদিজা মিস্ত্রী(৪ বছর)। স্থানীয়রা তাদের কে উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি তাদের কে বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাদের।স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে বাসন্তী ব্লকের ভরতগড় পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর গরাণবোস গ্রাম। সেখানেই রয়েছে ১৬৩ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি শিশু কেন্দ্র।অভিযোগ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আম্ফান এর পর অঙ্গনওয়াড়ি শিশু কেন্দ্রটি ভগ্ন হয়ে পড়ে। সেই থেকেই জরাজীর্ণ অবস্থায় চলছিল।গ্রামবাসীদের আরো অভিযোগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার কোন সরঞ্জাম ছিল না। শিশুদের খাদ্য বিক্রি করে রান্নার সরঞ্জাম কেনা হয়। এছাড়াও কেন্দ্রের মধ্যে সাপ,ব্যাঙ,টিকটিকির উপদ্রব রয়েছে।এমনকি মদের আসরও বসে। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে একাধিক মদের বোতল। একেবারেই অসুরক্ষিত ভাবেই চলছিল এই কেন্দ্র।এমনকি এই কেন্দ্রে কোন জলের কল নেই,নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা,নেই কোন শৌচালয়।স্থানীয় ভরতগড় পঞ্চায়েত সদস্য হাবিবুর সরদার জানিয়েছেন,‘সুপার ভাইজার সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছি। কোন সুরাহা হয়নি।আমরা চাই এটা পুরোপুরি সংস্কার হোক। যাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের পড়াশোনা করতে না হয়।’
স্থানীয় গৃহবধু তাপসী সরদার জানিয়েছেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের পড়াশোনা করতে হয়। আমরা চাই অবিলম্ব শিশুদের সুরক্ষার জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সংস্কার হোক।’
১৬৩ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি অনামিকা গুছাইত জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি ভগ্নদশা রয়েছে। সংস্কারের জন্য জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। এমন কি দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স কে ফোন করে সাহায্য মেলেনি। অগত্যা জখমদের কে অটোয় করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।তাছাড়া সেন্টারে যে মদের বোতল পড়ে রয়েছে,তা বদনাম করার জন্য এটা কেউ করেছে।’
ঘটনা প্রসঙ্গে বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মন্ডল জানিয়েছেন, ‘ঠিক কি ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে সঠিক ভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিডিও কে জানিয়েছি’।
অন্যদিকে বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকার জানিয়েছে, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি,জয়েন্ট বিডিও ও সিডিপিও কে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য।যারা আহত হয়েছে তাদের কে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মদের আসর বসে কি না তা জানা নেই। তবে যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে খতিয়ে দেখে পুলিশ প্রশাসন কে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলবো।’
উল্লেখ্য বাসন্তী ব্লকে মোট ৫৭৩ টি অঙ্গনওয়াড়ি শিশু কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে ২১২ টি অবস্থা ভালো।অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে কারোর বাড়ির বারান্দায়,গোয়ালঘরে কিংবা গাছের তলায় ত্রিপল টাঙিয়ে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct