আপনজন ডেস্ক: কলকাতার আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
এর আগে আজ সকালে সিবিআই হাইকোর্টকে জানায়, দোষীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে আবেদন করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই মামলার তদন্ত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের তোপের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রাজ্যে এবং বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেওয়ায় কলকাতায় তৃণমূল সরকার এবং চিকিৎসকদের মধ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়। নিম্ন আদালত আসামির মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা জারির জন্য পর্যাপ্ত উপাদান সরবরাহ করেনি। সিবিআই তখন হাইকোর্টকে জানিয়েছিল যে এই মামলায় সাজার অপ্রতুলতার বিরুদ্ধে একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার বা নিজেরাই আবেদন করতে পারে, রাজ্য সরকার নয়।
এদিকে, এই মামলায় আদালতের রায়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। “যখন কেউ শয়তান হয়... সমাজ কি মানবিক হতে পারে? কখনো কখনো কয়েক বছর পর তারা বের হয়ে যায়। কেউ অপরাধ করলে কি আমরা তাকে ক্ষমা করে দেব? কেউ যদি অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, সে আবার তা করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওদের রক্ষা করা আমাদের কাজ নয়। সঞ্জয় রায়কে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। নিম্ন আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। বিচারপতি অনির্বাণ দাস বলেন, এই অপরাধ “বিশেষভাবে জঘন্য”, তবে সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সংস্কারমূলক ন্যায়বিচার এবং মানব জীবনের পবিত্রতার নীতিগুলি মেনে চলতে হবে। বিচারপতি দাস আরও উল্লেখ করেন যে সিবিআই তাকে বোঝানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে যে এটি একটি ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ মামলা, এবং তাই সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুদণ্ড প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে এটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছিল। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে আজ আবার এই মামলার শুনানি শুরু হবে।
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল এই মামলার বিচার পশ্চিমবঙ্গের বাইরে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হবে না।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct