নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: সোমবার কলকাতায় আইটিসি সোনার হোটেলের সভাঘরে ওয়াকফ বিল নিয়ে জেপিসির বৈঠকে অংশ নিল রাজ্যের মুসলিম সংগঠনসহ বিশিষ্টজনরা। সেই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রাতক্তন বিচারপতি শহীদুল্লাহ মুন্ষী, য়োকফ বোর্ডের সিইও আহাসান আলি, সংখ্যালঘু সচিব পিবি সালিম, সচিব জি এইচ ওবাইদুর রহমান, বিত্ত নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাকিল আহমেদ প্রমুখ। ওয়াকফ সংশোধনী বিলের যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে তারা তাদের নানান মত তুলে ধরেন। ওয়াকফ সংশোধনী বিল-২০২৪ এর বিরোধিতা করে কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের কাছে জামাআতে ইসলামী হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখার তরফ থেকে প্রতিনিধিদল এক স্মারকলিপি জমা দেয়। তাতে নেতৃত্ব দেন রাজ্যের সভাপতি (আমীরে হালকা) ডা. মসিহুর রহমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দু’জন সেক্রেটারি সুজাউদ্দীন আহমেদ ও নজরুল ইসলাম।
আমীরে হালকা ডা. মসিহুর রহমান ওয়াকফ বিলের মধ্যে অসংগতি কোথায় কোথায় আছে, তা কমিটির সদস্যদের কাছে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মুসলিমকেই হওয়া বাঞ্ছনীয়। অথচ ওয়াকফ বিলে এর পরিবর্তন করা হয়েছে।
বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকীও এদিন জেপিসির বৈঠকে অংশ নিয়ে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে তা বাতিল করার আর্জি জানান।
ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ প্রত্যাহারের দাবিতে সংসদীয় যৌথ কমিটির সামনে সরব হন সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক তথা অল ইন্ডিয়অ মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি আরো বলেন ওয়াকফ সম্পদ মুসলমানদের নিজস্ব সম্পদ। এর উন্নয়ন ও সুরক্ষার জন্য ওয়াকফ বোর্ড কাজ করে যাবে, সেখানে কোনোভাবেই জেলা শাসকদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া যায় না।
প্রগ্রেসিভ ইন্টেলেকচুয়ালস অফ বেঙ্গল বা পিআইবির এক প্রতিনিধি দল জেপিসির সামনে বিশেষভাবে সরব হয়। পিআইবির তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির
সভাপতি ড. মানাজাত আলী বিশ্বাস, খিদিরপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. শামসুল আলম, প্রাক্তন বিচারক ও প্রাক্তন রাজ্য মাইনরিটি কমিশনের চেয়ারম্যান ইন্তাজ আলী শাহ, অধ্যাপক ড. সালেহা বেগম, আইনজীবী, সৈয়দ উজ্জামান, মাসুদ করিম, ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুর, কাজী মিজানুর রহমান স্যার, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। ইন্তাজ আলী শাহ ও শামসুল আলম ওয়াকফ বিল রূপায়িত হলে তার ভায়বহতার কথা তুলে ধরেন। যদিও তাদেরকে খুবই স্বল্প সময় বলতে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এদিনের বৈঠকের সঞ্চালকের ভূমিকায় থাকা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তবুও তারা জানান, কওমের সম্পদ রক্ষা করার বিষয়ে কোনও আপোস করা সম্ভব নয়। কারণ, নতুন ওয়াকফ বিল অনুযায়ী ওয়াকফ সম্পত্তির অধিকার থেকে সংখ্যালঘুরাই বঞ্চিত হবে। ওয়াকফ সম্পত্তি শুধূমাত্র মুসলিমদের হলেও তাদের নিয়ন্ত্রক ওয়াকফ কমিটিতে কেন অমুসলিম সদস্যদের রাখা হবে সেই প্রশ্ন তোলেন তারা।
এদিন সরকারি মুসলিম চাকরিজীবদের সংগঠন ‘পিস’-এর তরফে এক প্রতিনিধি দল জেপিসির বৈঠকে হাজির হয়। তাতে ছিলে তৌহিদ আহমেদ খান, উমর ফারুক প্রমুখ। তারা বিষয়টি নিয়ে জেপিসির সদস্য তথা সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে অারও বেশি সরব হওয়ার আর্জি জানান।
এছাড়া বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদের ড. জাহান আলি পুরকাইতও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, তরুণ বক্তা ও আইনজীবী ওয়ালি রহমানিও এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন। তবে, মুসলিম মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। পার্পল ফাইন্ডেশনের কর্ণধার তথা মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্যা উজমা আলম, সুবহি আজিজ, শাদাব ফাতেমামশাহিন ইবরার, শাহিন ইকবাল, কামার জাহান প্রমুখ হাজির ছিলেন। এছাড়া অন্যান্য মুসলিমরাও হাজির ছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct