আপনজন ডেস্ক: মেদিনীপুরের সরকারি হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন খাওয়ানোর কারণে মৃত এক গর্ভবতী মহিলার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একই স্যলাইন দেওয়ার পরে আরও চারজন গর্ভবতী মহিলাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হীরন্ময় ভট্টাচার্যকে নিয়ে গঠিত একটি ডিভিশন বেঞ্চে হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগের অভিযোগে এক গর্ভবতী মহিলার মৃত্যুর তদন্তের জন্য একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চিল বৃহস্পতিবার। ওই শুনানিতে বিচারপতি নির্দেশ দেন, রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে অবিলম্বে রিঙ্গার্স ল্যাক্টেক স্যালাইন ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে এই স্যালাইন ব্যবহার করে যেসমস্ত রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট স্বাস্থ্য দফতরকে এ বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছে যেখানে জানাতে হবে এই স্যালাইন ব্যবহার করে কারা কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে এই মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন নির্মাতা সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাও জানাতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।
বিচারপতি আরও বলেন, যে মুহূর্তে রোগী মারা গেলেন আপনাদের উচিত ছিল নোটিস জারি করা। এত দেরি হল কেন? ড্রাগ কন্ট্রোলার যখন বন্ধ করছেন, তার মানেই কিছু সমস্যা নিশ্চিত ছিল। প্রধান বিচারপতি স্যালাইন কাণ্ডে অভিযুক্ত ওষুধ কোম্পানিকে নোটিশ জারি করেছে কিনা প্রশ্ন করলে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, না এই মর্মে কোনও নোটিশ জারি করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তিনটে ব্যাচের স্যালাইন ওই কোম্পানির তৈরি ছিল। ত্রিশ হাজার স্যালাইন ওই একটি ব্যাচের ব্যবহার হয়েছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। সরকারি ল্যাবে পরীক্ষা হয়েছে। মুম্বই ল্যাবেও হয়েছে। এই কোম্পানি দেশের সব রাজ্যেই সরবরাহ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পশ্চিমবঙ্গে দুর্ঘেটনা ঘটেছে এই স্যালাইন ব্যবহার করে। এদিন মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ও বিজয় সিংহল জানান, এই ধরনের দূষিত স্যালাইনের বিষয়টি সামনে আসায় ২০২৪ সালের ২২ মার্চ-কর্নাটক সরকার স্যালাইন নির্মাতা সংস্থাকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল। ২০১৫ সালের জুন মাসে আলিপুরদুয়ারের চিকিৎসক এই বিষয়ে অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যতক্ষণ না ওই স্যালাইন ব্যবহারের ফলে প্রসূতিতের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির কথা প্রকাশ্যে আসে।এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ জানুয়ারি ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct