এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ৭ তম এসএলএসটি (মেইন) এর নবম দশমের প্রশ্ন ভুল মামলায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীকেও ইন্টারভিউয়ে ডাকার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট ৷ প্রশ্ন ভুলে আপার প্রাইমারিতে নাম্বার দিতে বাধ্য হয় মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। এবার নবম দশমেও সেই প্রশ্ন ভুলের মাসুল দিতে হচ্ছে কমিশনকে। ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্ন ভুল মামলায় দু’টি পৃথক মামলায় মামলাকারীদের ইন্টারভিউতে ডাকার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ১৮ নম্বর কোর্টে ২৩-২৪ সিরিয়ালে দু’টি মামলা ছিল।
একটি মামলায় (রিট পিটিশন নং ৪১৪/২০২৫) পরীক্ষার্থী বিনয় দত্তের পক্ষে তার আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ‘প্রশ্ন পুস্তিকা সিরিজ: সি’ এর অধীনে ৪, ২৮ ও ৬৫ নং প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও প্রথম ‘অ্যানসার কি’ বিবেচনায় সঠিক উত্তর লেখার জন্য আবেদনকারীকে নম্বর দেওয়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী বলেন, ‘প্রশ্ন পুস্তিকা সিরিজ: সি’ এর অধীনে ৪, ২৮ ও ৬৫ নং প্রশ্নের বিরুদ্ধে আবেদনকারী দ্বারা লিখিত উত্তরগুলির সঠিকতা খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি ফাইনাল ‘অ্যানসার কি’ অনুসারে পরীক্ষার্থীর দেওয়া উপরোক্ত তিনটি প্রশ্নের উত্তর ভুল বলে দাবি করেন। কিন্তু পরীক্ষার্থীর আইনজীবী জানান, প্রভিশনাল অ্যানসার কি অনুযায়ী উত্তর সঠিক দিয়েছেন তার মক্কেল।
তাই ওসব প্রশ্নে নম্বর বরাদ্দ করে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার নির্দেশ প্রার্থনা করা হয়। এই ইন্টিারভিউ প্রক্রিয়ার শেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি, সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে দাবি করা হয় উত্তরগুলির নম্বর দিয়ে যাতে ইন্টারভিউয়ে সুযোগ মেলে।
অার একটি মামলায় ( রিট পিটিশন নং: ৪১৩/২০২৫) সামিউন ইসলাম গাজীর আইনজীবী বলেন, অ্যানসার কি অনুযায়ী আবেদনকারী ক সিরিজের ৩০ এবং ৬৭ নং প্রশ্নের বিরুদ্ধে সঠিক উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু এই দুটি উত্তরের জন্য আবেদনকারীকে কোনও নম্বর দেওয়া হয়নি।
পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয় যে উত্তরগুলির বিপরীতে নম্বর দেওয়া হয়েছিল।
কমিশন বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে এই ভুল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইলেও আদালত তা মানতে চাননি। আদালত জানতে চায় যে কাট অফ মার্ক কোথায়? আদালত বিচার বিবেচনা করে রায়ে জানিয়েছে, যদি এই তিনটি কোশ্চেন এর ফুল মার্কস দিয়ে কাট অফে এ চলে আসে তাহলে ইন্টারভিউ এর অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের তরফে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী ফাইনাল প্যানেল না বেরনো পর্যন্ত কমিশন কাট অফ মার্কস প্রকাশ করবে না ৷ এক্ষেত্রে এই দুই মামলাকারীর ইন্টারভিউ নেওয়া ছাড়া কার্যত আর কোনো উপায় থাকছে না কমিশনের হাতে ৷ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের নবম দশম এ নিয়োগের ক্ষেত্রে উত্তীর্ণদের ১৫ ই জানুয়ারি শেষ ইন্টারভিউ ৷ তার আগেই আদালতের নির্দেশে এই মামলাকারীদের ইন্টারভিউ নিতে হবে কমিশনকে ৷
অন্যদিকে আদালতের তরফে কমিশনকে এক্সপার্ট কমিটি গঠন করে রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ পরীক্ষার্থী মামলাকারীদের আইনজীবী গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘সামগ্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ হোক তা চাই না। মক্কেলরা সুবিচার পাক এটাই আমাদের লক্ষ্য ।’
তবে এদিন পরীক্ষার কাট অফ মার্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী গোলাম মহিউদ্দিন ৷ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct