মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: দামোদর নদীর তীরে অবৈজ্ঞানিকভাবে বালি তোলার কারণে পরিযায়ী পাখিদের গতিপথে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে পাখিরা তাদের পুরনো আশ্রয়স্থল ছেড়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার বড়শুল এলাকার বেলনা গ্রামের জলাশয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। সুনসান পরিবেশ ও নিরাপত্তা পেয়ে পাখিরা এখানে স্বস্তিতে রয়েছে।
বেলনা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা সতর্ক রয়েছেন যাতে পাখিরা কোনোভাবেই বিরক্ত না হয়। একজন বাসিন্দা জানান, “আগে দামোদরের তীরে পাখির ঢল দেখা যেত। কিন্তু মানুষের অবহেলা, নদী থেকে বালি তোলা এবং পরিবেশ ধ্বংসের ফলে পাখিরা আর সেখানে আসতে পারছে না। এখানে আমরা নিশ্চিত করছি, কোনো চোরাকারবারি যেন পাখিদের কোনো ক্ষতি না করতে পারে।”
এই বছরেও শীতের শুরুতে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এসেছে। বিশেষ করে বড়শুলের জলাশয়ে নর্দান ফিলটেলসহ নানা প্রজাতির পাখির দেখা মিলছে। পাখি বিশেষজ্ঞ অর্ণব দাস জানান, শীতকালে পাখিদের সংখ্যা কমে যাওয়ার দু’টি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমত, পরিবেশের অস্বাভাবিক পরিবর্তন পাখিদের চলাচল ও বাসস্থানে প্রভাব ফেলছে। দ্বিতীয়ত, দীপাবলি উৎসবে শব্দদূষণ ও আতশবাজির শব্দ পাখিদের স্বাভাবিক জীবনধারায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, “পরিযায়ী পাখিরা শীতের সময় নতুন পরিবেশ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে। যদি আমরা বালি তোলা বন্ধ না করি, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে না আনি এবং পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল না হই, তাহলে একদিন এমন আসবে যখন শীতের আকাশে আর পরিযায়ী পাখিদের দেখা যাবে না।”
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct