নিজস্ব প্রতিবেদক, সাগর, আপনজন: গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালে সীমান্তের ওপার থেকে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা রুখতে স্থল, আকাশ ও জলপথে সর্বাত্মক নজরদারির আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে সাগর দ্বীপ ও রাস্তায় সিনিয়র আইপিএস অফিসারদের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সাগরের হেলিপ্যাড থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে চড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে হবে। আমি ইতিমধ্যেই নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলেছি। স্থলে, জলে ও আকাশপথে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বার্ষিক গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন কোনও অসুবিধা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কড়া নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।
গঙ্গাসাগর সীমান্ত প্রতিবেশী দেশের জলসীমার কাছাকাছি হওয়ায় বাংলাদেশে বর্তমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সমুদ্র সীমান্তের এমন একটি অংশ রয়েছে, যা বিপজ্জনক। নীরবে নজরদারি করতে হবে। আমরা সীমান্ত অতিক্রম করতে পারব না। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, আমাদের ওয়াচ টাওয়ার বাড়াতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেলার আকাশপথে সমীক্ষার নির্দেশ জারি করেছিলেন এবং ফুটেজটি সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলেন। ড্রোনের নজরদারি জোরদার করার নির্দেশও জারি করেছেন তিনি। তীর্থযাত্রীদের রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং করা হবে যার জন্য ১,১৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ড্রোন ভিত্তিক ট্র্যাকিংয়ের উপর বিশেষ জোর দিয়েছি। জিপিএস গাইডেড ইন্টেলিজেন্ট ক্রাউন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২০টি বিশেষ ড্রোন ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করা হবে, যা মেগা কন্ট্রোল রুম থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশ সূত্র জানায়, মেলার পুরো এলাকাকে ১২টি সেক্টর ও ৭টি সাব সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। সেখানে অন্তত ৩০ জন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বম্ব স্কোয়াড, স্নিফার ডগ, কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স ডিউটিতে থাকবে। লট ৮ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত নদী চ্যানেল পর্যবেক্ষণের জন্য নৌবাহিনীর দুটি দল, একটি কোস্টগার্ড দল এবং পাঁচটি সিভিল ডিফেন্স টিম থাকবে। ‘মে আই হেল্প ইউ’ পুলিশ বুথ থাকবে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গঙ্গাসাগর মেলাকে পরিবেশবান্ধব করে তোলাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য।
‘মকর সংক্রান্তি’ উপলক্ষে গঙ্গা ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থলে পবিত্র স্নান করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু তীর্থযাত্রী সাগর দ্বীপে জড়ো হন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct