শেখ কামাল উদ্দীন, কলকাতা, আপনজন: ‘বেশী বেতনের চাকরি ছেড়ে কম বেতনের চাকরি নেন আজহার উদ্দীন। কারণ লাইব্রেরিয়ান আজহার সাহেব বইয়ের সংস্পর্শে থাকতে পারবেন।’ আজহারউদ্দীন খান স্মারক বক্তৃতার অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কথাগুলো বলেন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক লায়েক আলি খান। তিনি আরও বলেন, ‘আজহার উদ্দীন সেই অর্থে কবিতা না লিখলেও তাঁর মধ্যে একটি কবিমন ছিল। তাঁর বইয়ের নামকরণ থেকেই তা স্পষ্ট। যেমন তাঁর গ্ৰন্থগুলোর কয়েকটির নাম ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘মেধাবী নীলিমা’, ‘দীপ্ত আলোর বন্যা’’ ইত্যাদি। ‘উনিশ শতকে বাংলার মুসলিম মেয়েদের লেখাপড়া’ বিষয়ে স্মারক বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিশিষ্ট গবেষক স্বপন বসু বাংলার মুসলিম মেয়েদের চিকিৎসা অধ্যয়ণ সম্পর্কে আব্দুর রহিম সম্পাদিত ‘বালারঞ্জিকা’ পত্রিকার প্রসঙ্গ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘১৮৯৪ সালে ইদুন্নেসা বিদ্যাময়ী ফিমেল হসপিটালে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। ১৮৯৬ সালে লতিফান্নেসাও চিকিৎসক হন। দুজনেই ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলে পড়াশোনা করেন। উনিশ শতকে মুসলিম মেয়েরা এইভাবে চিকিৎসা বিদ্যা অধ্যয়ণ করেন। এছাড়া বেগম রোকেয়া ও নবাব ফয়জুন্নেসাও মুসলিম নারী হিসেবে বিদ্যাশিক্ষা করেন। অর্থাৎ মুসলমান মেয়েরা পড়াশোনা করতেন তার প্রচুর উদাহরণ রয়েছে। ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে প্রতিবছর মুসলমান মেয়েরা পড়তেন। ইংরাজী শিক্ষা সেই স্কুলে ছিল বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ সেই সময়ে মুসলমান মেয়েরা ইংরাজী শিক্ষা গ্ৰহণ করতেন।’
আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে রবিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে এই স্মারক বক্তৃতায় সভামুখ্য ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার। আজহার উদ্দীনকে নিয়ে এই আলোচনা সভা হচ্ছে বলে তিনি তাঁর মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
এদিনের সভায় বহু বিশিষ্ট শ্রোতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আজহার উদ্দীন সাহেবের পুত্র, আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে আমজাদ হোসেন ও সাইফুল্লা, মীরাতুন নাহার, সুমিতা চক্রবর্তী, অশোক পাল, আরফান আলি বিশ্বাস, নুরুস সালাম, জাহিরুল হাসান, রোশেনারা খান প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct