নিজস্ব প্রতিবেদক , ক্যানিং, আপনজন: দশম শ্রেণিতে ভর্তির ফির জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৫৫০ টাকা। কিন্তু সেই টাকা পেশায় ভ্যান চালক বাবার পক্ষে ভর্তির শেষ দিনে দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় ১৪ বছরের কিশোরী নাসিমা মোল্লা আত্মঘাতী হল। ঘটনাটি ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানা এলাকার। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সারেঙ্গাবাদ ইটখোলা হাই স্কুলে নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিল নাসিমা মোল্লা। ভ্যান চালক কন্যার স্বপ্ন ছিল সামনের বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার। তার জন্য তার বাবা ইসমাইল মোল্লার কাছে সে পীড়াপীড়ি করতে থাকে দশম শ্রেণির ভর্তি ফি ৫৫০ টাকা তাকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার বাবা সেই টাকা জোগাড় করতে না পারলেও তাকে আশ্বাস দেন কয়েকদিনের মধ্যেই সেই টাকা জোগাড় করে দেবেন। কিন্তু শনিবার িছল দশম শ্রেণিতে ভর্তির শেষ দিন। স্কুলের তরফেও ভর্তি ফি জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি না করায় বিমর্ষ হয়ে পড়ে নাসিমা। এ নিয়ে সহপাঠীদের কাছে দুঃখের কথাও ব্যক্ত করে। হতাশ হয়ে পড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন শেষ হতে বসায়। অবশেষে সে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পথ বেছে নেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে তার বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের কেউই ছিল না। সবাই নানা কাজে বাড়ির বাইরে ছিল। সেই সুযোগে চাষের জন্য ঘরে রাখা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাসিমা। পরে বাড়ির লোক এসে বুঝতে পারে সে বিষ পান করেছে। তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। ডক্তাররা মরণপণ চেষ্টা চালালেও নাসিমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি।
সে যে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে না পারার অপমানে আত্মঘাতী হয়েছে সে কথা স্বীকার করেন তার দাদা। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এই সামান্য টাকাও তার বাবার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না হলেও অন্য কেউ এগিয়ে আসেনি সাহায্য করতে। তার খেদোক্তি, যদিও কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা শিক্ষা দরদি মানুষ মাত্র ৫৫০ টাকা দিতেন তাহলে হয়তো এভাবে প্রাণ দিতে হত না তার বোনকে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct