আপনজন ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বিএসএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের অনুমতি দিয়ে রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তোলার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
একটি দক্ষ প্রশাসনের কী করা উচিত তার এবিসি ফরমুলায় বর্ননা করেন। নবান্নে অনুষ্ঠিত এই প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এ থেকে এড়ানো, ব্লকের বদলে বি, সি কী বলব, বিভ্রান্তি তৈরি করা, ধ্বংসের জন্য ডি অফিসারদের একাংশ সেটাই করছেন। তাই তিনি বলেন, সক্রিয় হোন, সাহসী হোন, সৃজনশীল হোন, উন্নয়নের জন্য কাজ করুন, উদ্যমী হোন, আর্থিক বিষয়গুলি মাথায় রাখুন।
মমতা জেলা এবং কলকাতার আধিকারিকদের তাদের এলাকায় কী ঘটছে তার উপর নজর না রাখার জন্য তিরস্কার করেন। বৃহস্পতিবার সকালে মালদহ জেলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর দুলাল সরকারের খুনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সীমান্তের ওপার থেকে গুন্ডারা এসে এখানে মানুষ খুন করছে। তৃণমূল কংগ্রেস বা পুলিশ সীমান্ত পাহারা দেয় না। বিএসএফ করছে। কেন্দ্রের সঙ্গে যোগসাজশ করে সীমান্তের ওপারের লোকজনকে ঢুকতে দিচ্ছে তারা।
মমতা বলেন, সীমান্তে যা হচ্ছে, তার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দোষারোপ করবেন না। তিনি বলেন, আমরা গ্রাম থেকে তথ্য পাই। জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও তথ্য দেওয়া হয় না।
মমতা জানতে চান, শেষ কবে সরকারি আধিকারিকরা মিড-ডে মিল এবং অন্যান্য সরকারি প্রকল্প খতিয়ে দেখেছেন? ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য ব্লক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা কি কিছু করেছে? ওরা কাজ করে না, আমাদের ও জনগণকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বেশিরভাগ দফতরের আধিকারিকদের টেনে তোলেন। ডিজিপি রাজীব কুমারকে বলেন, রাজীব, ডিআইবির (জেলা গোয়েন্দা শাখা) ব্যাপারে তোমাকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা কিছুই করে না। তারা কোনো তথ্য রাখে না, কোনো তথ্য দেয় না। তিনি বলেন, ‘পুলিশ বিভাগে অনেক পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। লবি কাজ করে। পুলিশ সুপাররা নিজেদের মতো করে চক্র তৈরি করেন। তারা চায় তাদের কাছের মানুষেরা পদোন্নতি পাক। এটা চলতে পারে না। মমতা বলেন, প্রভাত মিশ্র (রাজ্যের অর্থ সচিব) ভদ্রলোক, কিন্তু আপনাকে দক্ষ হতে হবে। দু-একজন অফিসার ছাড়া বাকিরা (অর্থ বিভাগের) বাম রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। ওরা [বিভাগটি] পরিণত করেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। এটা সভা-সমাবেশ নিয়ে আলোচনার জায়গা নয়।
মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী কিছু রুটের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো হয়েছে বলে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলে মমতা মন্ত্রীকে চুপ করিয়ে দেন। মমতা বলেন,কাজের ফাঁকে গোটা শহর ঘুরে দেখুন, হাসপাতালে যান, দেখুন কী হচ্ছে।সন্ধে ৬টার পর মা উড়ালপুলে যান চলাচলের অনুমতি নেই। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, জরুরি প্রয়োজনে মানুষ রাতে যাতায়াত করবেন কী করে? এরপর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পালা।
স্কুলগুলিতে সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মমতা বলেন, যদি কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়, দয়া করে আমাদের সাথে পরামর্শ করুন। আমি জানতাম না। মুখ্যসচিব জানতেন না। আমি মিডিয়া থেকে জানতে পেরেছি। মুখ্য সচিবের সম্মতি ছাড়া এটি কার্যকর করা হবে না।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct