মোল্লা মুয়াজ ইসলাম , বর্ধমান, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গের ফুটবল জগতে বর্তমানে আদিবাসী প্রতিভার দীপ্তি সবচেয়ে বেশি। সেই দীপ্তির মুকুটে নতুন এক নক্ষত্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার মশারু গ্রামের রবি হাঁসদার নাম। দারিদ্র্যের কঠোর বাস্তবতার মধ্যে বেড়ে ওঠা রবি এখন সন্তোষ ট্রফির সর্বোচ্চ স্কোরার, তাঁর ঝুলিতে রয়েছে অসামান্য ৮টি গোল।
অত্যন্ত দরিদ্র আদিবাসী পরিবারে জন্মানো রবির জীবন ছিল কঠিন। বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর ফুটবল ছেড়ে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কাস্টমস ক্লাবের কর্মকর্তাদের সহায়তায় আবার মাঠে ফিরতে পেরেছিলেন। কলকাতা লিগ থেকে শুরু করে সন্তোষ ট্রফি— প্রতিটি ধাপে দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই শুধুমাত্র এক ফুটবলারের নয়, এক সংগ্রামী মানবের গল্প।
জাতীয় গেমসে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার পর সন্তোষ ট্রফিতেও অসাধারণ পারফরম্যান্স করে রবি বাংলার ফুটবলে নতুন আশা জাগিয়েছেন। ৩১ ডিসেম্বর সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে বাংলার হয়ে জয় নিশ্চিত করতে মরিয়া রবি ইতিমধ্যেই ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করেছেন। তাঁর লক্ষ্য তিনটি— সন্তোষ ট্রফি জয় করে একটি স্থায়ী চাকরি, আইএসএলের টিমে সুযোগ এবং জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া।
রবির ফুটবল জগতের প্রেরণা সুনীল ছেত্রী। তাঁকে অনুসরণ করে রবি নিজের প্রতিভাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। তাঁর গল্প দারিদ্র্যের কাছে হেরে যাওয়া নয়, বরং প্রতিভা ও লড়াইয়ের জোরে নিজের পরিচিতি তৈরি করার এক জীবন্ত উদাহরণ।
পশ্চিমবঙ্গের ফুটবলকে নতুন দিশা দেওয়া রবি হাঁসদার এই সংগ্রাম ও সাফল্যের যাত্রা বাংলার মাঠে নতুন আলো জ্বালিয়েছে। তাঁর মতো প্রতিভাবান ফুটবলারের উদয় বাংলার ফুটবলে এক সোনালী যুগের বার্তা দিচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct