নিজস্ব প্রতিবেদক, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: কেরল থেকে ধৃত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারউল্লা বাংলার’ সদস্য মহম্মদ শাদ ওরফে শাব রাদি’র সূত্র ধরে জঙ্গি সন্দেহে ফের মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে আরও দুজনকে গ্রেফতার করল অসম এসটিএফ। রবিবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা থানার দুর্লভপুরের গলিপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শাব রাদি’র পিসতুতো ভাই সাজিবুল শেখকে। একই ভাবে নওদা থানার ভোলা গ্রাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে মুস্তাকিম মণ্ডল। এর আগে ধৃত শাব রাদিকে জেরা করে অসম এসটিএফ হরিহরপাড়া থানা এলাকা থেকে আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ফলে জঙ্গি সন্দেহে এখন পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করল অসম এসটিএফ। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজিবুল সম্পর্কে শাব রাদি’র পিসতুতো ভাই। বছর দুয়েক আগে কাজের সন্ধানে আরব মুলুকে গিয়েছিল এই সাজিবুল। বছর খানেক আগে বাড়ি ফিরে আসে এসে সে।
ঘটনার সময়ে সাজিবুল দুর্লভপুর দক্ষিণ পাড়ার নিজের বাড়িতে ছিল না। ১৫ দিন আগে তার কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে। তাকে দেখতে ওই রাতে
সে দুর্লভপুরের গলিপাড়াতে শ্বশুরবাড়িতে ছিল। সেই সময়ে অসম এসটিএফ এবং নওদা থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থেকেই সাজিবুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় নওদা থানায়।
একই ভাবে শাব রাদি’র সূত্র ধরেই অসম এসটিএফ রবিবার গভীর রাতে নওদা থানার ভোলা গ্রামের মুস্তাকিম মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। মুস্তাকিম কাঁচের দরজা-জানালা ফিটিংসের কাজ করত গ্রামে।
সাজিবুল ও মুস্তাকিমের পরিচিতি রয়েছে। সে কথা সাজিবুলের পরিবার স্বীকারও করেছে। এদিকে, অসম থেকে গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন এক জঙ্গি। অসম পুলিশের হাতে গ্রেফতার গাজী রহমান। অপারেশন প্রভাত যা অসামিস এস টিএফ করছে সেই অপারেশনে গ্রেফতার এই জঙ্গি । এস টি এফ কেস নাম্বার ২১/ ২০২৪ । এর মূল অভিযুক্ত কাজী রহমান। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে,বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীতে ছেয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ সীমান্তবর্তী এলাকা, চিন্তিত গোয়েন্দারা। বর্তমানে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীতে ছেয়ে গিয়েছে বর্ডার বেষ্টিত মুর্শিদাবাদ। এমনটাই দাবি গোয়েন্দাদের।সম্প্রতি কেরল থেকে ধৃত জঙ্গি সাদ রাদি, বাংলাদেশের বাসিন্দা, বিগত প্রায় ৮ বছর ধরে বাস করছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের বাসিন্দা হয়ে।
অন্যদিকে ধৃত সাদ রাদির গ্রেফতারের পর তার কাছে পাওয়া তথ্য অনুসারে দিন কয়েক আগেই হরিহরপাড়া থেকে গ্রেফতার হয় মনিরুল সেখ ও আব্বাস আলী নামে জঙ্গি সংগঠনের আরও ২ সদস্য। পাশাপাশি ফের ৩ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার হয় বি এস এফের হাতে, জলঙ্গী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে। যদিও বি এস এফ সূত্রে জানা গিয়েছে অনুপ্রবেশকারীদের ৩ জনকে গ্রেফতার করা গেলেও, আরও ৩ জন রয়েছে এখনও অধরা। ধৃত ৩ জনের নাম কামাল হোসেন , শাহাদাত আলী , ও হজরত আলী। পরবর্তীতে বি এস এফের পক্ষ থেকে ধৃত ৩ অনুপ্রবেশকারীকে নিয়ম অনুসারে তুলে দেওয়া হয় জলঙ্গী থানার পুলিশের হাতে। এরপর শুক্রবার ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে তোলা হয় মুর্শিদাবাদ জেলা আদালতে। পাশাপাশি পুলিশের আবেদন রেখে ধৃতদের ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। বর্তমানে ধৃত ৩ অনুপ্রবেশকারী রয়েছে জলঙ্গী পুলিশের হেফাজতে। যদিও বাকি ৩ অনুপ্রবেশকারীদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি শনিবার দুপুর পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবে বলা যেতে পারে- এই মুহুর্তে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীতে রীতিমতো ছেয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত বেষ্টিত মুর্শিদাবাদ। ফলে নজরদারি আরো জোরদার করা হচ্ছে। কারণ একের পর এক জঙ্গি ধরা পড়ার পর ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। তার জন্যই বাংলাদেশ থেকে যারা এদেশে প্রবেশ করছে তাদের গতিবিধি নিয়ে এবং তারা কোন কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত সেই প্রসঙ্গে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এর পাশাপাশি,নাকা চেকিং এর সময় প্রচুর পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার করল বহরমপুর থানার পুলিশ। ধৃত ৪। শনিবার বহরমপুরের কুমড়োদয় ঘাট সাহেবপাড়া সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ নাকা চেকিং করার সময় একটি ২০৭ গাড়িকে আটক করে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে আসে একের পর এক নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। পিছন পিছন আসছিল একটি চার চাকা গাড়ি ও। দুটি গাড়িকেই পুলিশ ধরে ফেলে। পুলিশ জানিয়েছে উদ্ধার হওয়া নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ প্রায় দশ হাজারেরও বেশি। বহরমপুর থেকে নদিয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানা এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct