আপনজন ডেস্ক: সিরিয়ায় মোহাম্মদ কানজো হাসান নামে এক সাবেক বিচারপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক মিনিটেরও কম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দিতেন তিনি। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে দিতেন। এভাবে সামরিক বিচারালয়ে হাজার হাজার বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি যেসব বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড দেননি তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি টাকা নিয়েছেন। সিরিয়ার মানবাধিকার কমিশন বলছে, সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ কানজো হাসানকে টারটাস অঞ্চল থেকে গ্রেফতা করা হয়। ওই বিচারপতির সঙ্গে আরও ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ওই বিচারপতির সহযোগী বলে জানানো হয়েছে। সিরিয়া ওয়ার মনিটার সংস্থা জানিয়েছে, সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সরকারের আমলে হাজার হাজার বিরোধীদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের জেলে আটক রেখে নির্মন নির্যাতন করা হয়। বহু মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। নতুন সরকার এসে সাবেক আমলের হত্যাকারীদের আটক করতে শুরু করেছে। সিরিয়ার অন্যতম কুখ্যাত জেলের নাম সিডনায়া। নির্যাতন, বিচার-বহির্ভূত হত্যার জন্য পরিচিত এই কুখ্যাত জেল ছিল আসাদের তৈরি। এখানেই বিদ্রোহাদের ঢুকিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। রাজধানী দামেস্ক থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জেল। ২০১১ সাল থেকে এই জেলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষকে বন্দি করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। তার মধ্যে মাত্র ছয় হাজার ব্যক্তি পরে ছাড়া পেয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ এখনও নিখোঁজ। ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সিরিয়ার মিলিটারি ফিল্ড কোর্ট বা সেনা আদালতের প্রধান ছিলেন কানজো। ২০১১ সালেই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গোটা সিরিয়ার সেনা আদালতের প্রধান হিসেবে পদন্নোতি হয় তার। অভিযোগ এই সময়ে, এক মিনিটেরও কম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দিতেন কানজো। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে দিতেন। অর্থাৎ, কার্যত বিনা বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো বিদ্রোহীদের।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct