আপনজন ডেস্ক: লোহিত সাগরে চলমান হুতি বিদ্রোহীদের হামলার কারণে মিসরীয় অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি জানিয়েছেন, চলতি বছরে সুয়েজ খাল থেকে দেশটি প্রায় ৭০০ কোটি ডলার আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই অর্থনৈতিক ক্ষতি আঞ্চলিক সংকট এবং লোহিত সাগরের উত্তেজনার ফল বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছরে সুয়েজ খালের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। প্রেসিডেন্ট আল-সিসি বলেছেন, ২০২৪ সালে এ আয়ের পরিমাণ ৬০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। তবে এই ক্ষতির বিস্তারিত কারণ সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে প্রায় ১০০টি হামলা চালিয়েছে। গাজার পরিস্থিতি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের অংশ হিসেবে হুতিরা এই আক্রমণ চালাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সুয়েজ খাল, যা ভারত মহাসাগর ও লোহিত সাগরকে ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য প্রায় পুরোপুরি এই জলপথের ওপর নির্ভরশীল। এই খাল থেকে মিসর যে রাজস্ব আয় করে, তা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস।
লোহিত সাগরে হুতিদের হামলার কারণে অনেক শিপিং কোম্পানি তাদের জাহাজ আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের পথ ধরে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে। এই দীর্ঘ রুটের কারণে পণ্য পরিবহনে সময় এবং খরচ দুটোই বাড়ছে। এর ফলে একদিকে পণ্যের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে সরবরাহ ব্যবস্থায় দেরি হচ্ছে।
লোহিত সাগরের নিরাপত্তাহীনতা কেবল মিসরের রাজস্ব আয়কেই নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। মিসরের অর্থনীতিতে সুয়েজ খালের ভূমিকা অপরিসীম, আর এই সংকট মোকাবিলায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct