সাবির আহমেদ, মগরাহাট, আপনজন: অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও মগরাহাটের ময়দান ওলি জামে মসজিদ ও মগরাহাট মসজিদ সংলগ্ন এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল বিদ্যালয় মাঠে তিন দিনের তবলিগি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হল ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর। যদিও গত ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার জুম্মার নামাজের পূর্বে বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমায় আগত দেশ বিদেশের আল্লাহর রাস্তায় সময় নিয়ে আসা মেহমানদের নিয়ে ইজতেমা শুরু হয়। সূত্রের খবর এবছর ইজতেমাতে আরব, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া প্রভৃতি বিভিন্ন দেশের জামাত উপস্থিত ছিলেন। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন প্রদেশের এবং পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন জেলা ও ময়দান ওয়ালী মসজিদের সাথে জড়িত সকল মারকাজ বা হালকার জামাত ইজতেমা শুরুর আগেই এখানে পৌঁছে যায়।
তিন দিনের ইজতেমাতে বিভিন্ন রাজ্যের মুরুব্বীগন তাঁদের ঞ্জানগর্ভ বক্তব্যের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মুসলমানদের এক আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, রাসূল (সাঃ) দেখানো আদর্শকে অনুসরণ , অনুকরণ ও আমাদের ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন, পারিবারিক জীবন তথা জীবনের সকল ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে উৎসাহিত করেন। তারা বলেন, শুধু পুরুষগন দ্বীনের দাওয়াতের কাজে অংশ নিলে হবেনা সেই সাথে মহিলাদেরও একাজে মাহরাম পুরুষদের সাথে অংশগ্রহণ করতে হবে। কেননা পুরুষ ও মহিলা একে অপরের পরিপূরক। শুধু স্বামী দ্বীনদার হলে হবেনা বাড়ির মহিলা ও বাচ্চা সকলকে দ্বীনের মধ্যে আসতে হবে। তবেই আমরা পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের মধ্যে চলতে পারব।বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে সকল বয়সের সকল মুসলমানের আবশ্যিক কুরআন শিক্ষার ব্যাপারেও জোর দেন। প্রত্যেক মসজিদে মক্তব। মসজিদে ও বাড়িতে দৈনন্দিন আমল তালিম, মাসোয়ারা, কুরআন শেখা- শেখানো ও একে অপরকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো করতে উদ্বুদ্ধ করেন। সেই সাথে মানুষের সাথে আমাদের লেনদেন, আচরণ, সহানুভূতি, সৌভ্রাতৃত্ব প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমরা যেন আমাদের পূর্বপুরুষদের রাসূল (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীদের জীবন অনুসরণ করি। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন রবিবার সকাল নটা থেকে বিভিন্ন স্থানে ভাগ করে উপস্থিত আলেম ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র,স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের এবং চারমাস- চল্লিশ দিন আল্লাহর রাস্তায় সফরকারীদের নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মজলিস হয়। সকল মজলিসে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে সকল ক্ষেত্রে সফলতার সুন্দর দিকনির্দেশনা দেওয়ার সাথে সাথেই সকলকে দাওয়াতের কাজে অংশ গ্রহণ করার জন্য আল্লাহর রাস্তায় সফর করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। ইজতেমার বিভিন্ন পর্বে বিষয়ভিত্তিক কথা রাখেন দিল্লির বিশিষ্ট মুরব্বীগন। তাঁদের উর্দু হিন্দি বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ অন্যান্য জিম্মাদারি পালন করেন মাওলানা মিজানুর রহমান, মুফতি আবু সিদ্দিক, মুফতি আসলাম, প্রফেসর মুসা কালিম, মাওঃ গোলাম বারি,আব্দুল হান্নান প্রমুখ বহু বিশিষ্ট জন।
ইজতেমা উপলক্ষে ইসলামী বইপত্র, শীতের পোশাক, ইসলামী দ্রব্যাদি ও খাবারের পসরা সাজিয়ে ছিল রাস্তার ধারে ধারে ব্যবসায়ীরা। আগতদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, স্টেশন ও মোড়ে মোড়ে চা, বিস্কুট ও পানি পানের ব্যবস্থাও ছিল।
ইজতেমার শেষ দিন দোয়ার মজলিসে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে যানযট ও অন্যান্য মানুষের অসুবিধার দিক এড়াতে মাত্র কয়েক মিনিট হাত তুলে মহান আল্লাহর নিকট বিশ্ব মানবের দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বিক কল্যাণ প্রার্থনা করে দোয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct