আপনজন ডেস্ক: বড়দিনের আগেই বিক্ষোভে উত্তাল যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া। দেশটির হামা শহরের নিকটবর্তী খ্রিষ্টানপ্রধান শহর সুকাইলাবিয়ায় ক্রিসমাস ট্রি (বড়দিনে সাজানো গাছ) পোড়ানোর ঘটনায় রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই বিক্ষোভ। মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশ পরা অস্ত্রধারীরা সুকাইলাবিয়ার প্রধান চত্বরে প্রদর্শিত ক্রিসমাস ট্রিতে আগুন দিচ্ছে।
এ ঘটনার জন্য সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থি শাসকদল দায়ী কিছু বিদেশি যোদ্ধাদের চিহ্নিত করে আটক করেছে এবং ঘোষণা দিয়েছে যে, পোড়া ট্রি দ্রুত পুনর্নির্মাণ করা হবে।
এ ঘটনার পর, সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দাবি করে। দামাস্কাসের বাব তুমা এলাকায় বিক্ষোভকারীরা ক্রস এবং সিরিয়ার পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগান দেয়। আমরা আমাদের ক্রসের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করব। এক বিক্ষোভকারী জর্জেস এএফপি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, যদি আমরা আমাদের দেশে আমাদের খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করতে না পারি তবে এখানে থাকার আর কোনো মানে হয় না। সিরিয়ায় বহু জাতিগোষ্ঠী এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বাস।
এর মধ্যে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ান, খ্রিষ্টান, দ্রুজ, আলাউই শিয়া এবং আরব সুন্নি মুসলিমদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে, সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের শাসন বিদ্রোহী বাহিনীর হাতে পতিত হয়। যা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান ঘটায়। সিরিয়ার নতুন শাসক দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দেশ শাসনে একটি নতুন পদ্ধতি গ্রহণের কথা বলছে।
যদিও তাদের অতীত ছিল জিহাদিসমৃদ্ধ, বর্তমানে তারা ইসলামপন্থি নীতিতে পরিচালিত। এইচটিএসের নেতারা সিরিয়াকে সব সিরিয়ানের জন্য তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার কথা বলেছেন।
এ অবস্থায়, সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বকে বিদেশি যোদ্ধা, উগ্রবাদী গোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ঠেকিয়ে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। সিরিয়ার ভবিষ্যৎ শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করছে নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং দেশের সব জনগণের জন্য সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ওপর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct