আপনজন ডেস্ক: ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ায় “পোড়া মাটি” নীতি অনুসরণ করে আসছে। গাজা উপত্যকায় লাগাতার বোমা হামলা এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা থেকে শুরু করে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা এবং সিরিয়ায় বিমান হামলা পর্যন্ত সবকিছুই এ অঞ্চলে ইসরায়েলের অস্থিতিশীলতা নীতিরই অংশ।
‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিশ্বকে মুক্তি দিতে পারে ইসরায়েল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে একটি ইহুদি সংস্থার গবেষক ইয়াকুব কাতজ অসাধারণ আত্মবিশ্বাসের সাথে এবং ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দাবি করেছেন যে, ইসরায়েল এককভাবে বিশ্বকে “হুমকি” থেকে বাঁচাতে প্রস্তুত। কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো, ইরান যদি না থাকে তাহলে কে পৃথিবীকে সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি অর্থাৎ ইসরায়েলের হাত থেকে বাঁচাবে? ইসরায়েলের প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কে দাঁড়াবে? যে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বের স্বাভাবিক রাজনীতিকে ব্যবহত করছে এবং পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের একটি অংশকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করেছে।
ইসরায়েলের অশুভ শক্তি প্রভাব
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্বব্যাপাী বহু সংঘাতে ইসরায়েলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এমনকি জাতিসংঘে ইহুদিবাদীদের প্রভাব বিশ্ব রাজনীতিকে ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। AIPAC-এর মতো শক্তিশালী ইহুদিবাদী লবি যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে ইসরায়েলের সেবায় পরিণত করেছে যার ফলে শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে যা কিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরইলের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ।
উদাহরণস্বরূপ, বিগত দশকগুলোতে ইসরায়েল পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর জন্য কল্যাণকর হবে এমন কোনো জোট বা চুক্তিতে পৌঁছার পথে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। কিছু আরব দেশে প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ইসরায়েল এ ষঢ়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। ব্যাপক “গণবিধ্বংসী অস্ত্র” আছে এমন ভিত্তিহীন দাবি তুলে ২০০৩ সালে ইরাকে যে হামলা চালানো হয়েছিল তার পেছেন ইহুদিবাদীদের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আর এর ফলে ইরাকের ধ্বংস এবং এইএস’র মতো জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আবির্ভাব ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
গণহত্যা এবং পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের বিস্তার
গাজা উপত্যকার বর্তমান অবস্থা এবং এই এলাকাটি ২০ লাখ মানুষের উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করা ইসরায়েলের নৃশংসতার প্রতীক। এই অঞ্চলে ক্রমাগত আগ্রাসন এবং এর বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য পশ্চিমের ওপর ইসরায়েলের অব্যাহত চাপ তেলআবিবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ। তবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক প্রভাবের কারণে বিশ্ব গাজা ইস্যুতে নীরব রয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজারের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct