আপনজন ডেস্ক: বর্ণবাদ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দৌড়ানোর পরে চলতি সপ্তাহে লন্ডনে পৌঁছান দেও কাতো। কিন্তু বর্ণবাদ সচেতনতার এই সংগ্রামে ইউরোপে পৌঁছানোর পরে বারবার বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে কেপটাউন থেকে যাত্রা শুরু করেন দেও কাতো। ৫১৬ দিনের এই কর্মযজ্ঞে অবিচ্ছিন্নভাবে দৌড়েছেন তিনি। মাঝে কয়েক সপ্তাহ কারাগারেও থাকতে হয়েছে, ভুগতে হয়েছে গুরুতর অসুস্থতায়।
দেও কাতো মানব অভিবাসনের ইতিহাস এবং অনেক কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের বৈষম্যের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরার জন্য এই মহাকাব্যিক দৌড়ের পরিকল্পনা করেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপের কিছু অংশে পুলিশ এবং পথচারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন বর্ণবাদ সহ্য করতে হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, কাতো আগামী সেন্ট্রাল লন্ডনে পৌঁছাবেন। যেখানে পশ্চিম লন্ডনের হ্যামারস্মিথে তার দৌড় শেষ করবে। ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে শত শত দৌড়বিদদের সঙ্গে যোগ দেবেন তিনি।
চলতি সপ্তাহে গার্ডিয়ানের সঙ্গে আলাপকালে উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী এই দৌড়বিদ বলেন, কিছু তীব্র নিম্নচাপ সত্ত্বেও সামগ্রিক অভিজ্ঞতা মানবতার প্রতি তার বিশ্বাসকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
তিনি বহুভাষী, ইংরেজিসহ তিনটি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। তিনি আর আগেও ইংল্যান্ডে থেকেছেন, কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে বতসোয়ানায় ফিরে যান।
কাতো জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে কেনিয়ার ১,৮০০ মাইল উত্তরে একদল শিশু তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্কুলে যাওয়ার সময় ৫ মাইল পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। ‘তারা আমার সাথে দৌড়াদৌড়ি চালিয়ে যেতে চেয়েছিল।’
চলতি পথে যুদ্ধ-সংঘাতও তার চোখে পড়ে। কাতো বলেন, আমি কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, সুদান এবং উত্তর ইথিওপিয়ার মতো জায়গায় সংঘাত লক্ষ্য করেছি।
তিনি বলেন, পথে পুলিশ দিনে অন্তত চারবার আমাকে আটকায়। মাঝে-মধ্যে দেখি, স্থানীয়রা আমার ছবি তুলে পুলিশে রিপোর্ট করছে।
কাটো চান, তার এই যাত্রা আফ্রিকা থেকে মানুষের প্রথম দিকের অভিবাসনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। বিশেষ করে লোকেরা বলে, ‘যেখান থেকে এসেছে সেখানে ফিরে যাওয়া উচিত’ - এমন বর্ণবাদী ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে।
সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় তিনি বলেন, এই দৌড় অভিবাসনের ইতিবাচক দিক এবং আরও সাংস্কৃতিকভাবে সংযুক্ত এবং সমৃদ্ধ বিশ্ব সমাজ তৈরির সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করেছে।
তার অভিজ্ঞতায় তিনি বিশ্বাস করেন, কুসংস্কারের উপরে মানবতা জয়ী হবে। কাতো বলেন, আমি মনে করি, ভবিষ্যতে আমরা জাতিগত বৈষম্যমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct