দেবাশীষ পাল , মালদা, আপনজন: মাছ বিক্রির সাথে সাথে বন্ধ নেই মানুষের পরিষেবার কাজ। মাছ কাটতে কাটতেই সাধারণ মানুষকে দিচ্ছেন পরিষেবা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জয়দেব হালদার। রাজনীতি তার নেশা পেট চালাতে করতে হচ্ছে মাছের ব্যবসা।চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক রাজনীতির নেতা তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কথা,মেঝেতে ছড়ানো রুই, কাতলা, বোয়াল, ট্যাংড়া, পাবদা। বঁটিতে আঁশ ছড়ানোর ফাঁকে দেশী, টাটকা নদীর মাছ বলে হাঁক দিচ্ছেন বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। তাঁকে ঘিরে কেউ বোয়াল, কেউবা দাম জানতে চাইছেন রুই, কাতলার। সে ভিড়েই এসে হাজির এক যুবক চেয়ে বসলেন পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে শংসাপত্র । তাঁর কথা শুনেই থেমে নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য জয়দেব হালদার, বঁটিতে মাছের আঁশ ছড়ানো ব্যস্ত দুই হাত।তার মাঝে পকেট থেকে ফোন বের করে ফোন করলেন বাড়িতে বাড়ি থেকে ছুটে এলো তার এক ব্যক্তি হাতে আবার ওই যুবকের চাওয়া শংসাপত্র।যুবকের হাতে ধরিয়ে দিল পঞ্চায়েত সদস্যের শংসাপত্র। এমন ঘটনা এক দু’দিন নন, মাছ বিক্রির ফাঁকে প্রায় ছয় বছর ধরে মানুষকে পঞ্চায়েতের পরিষেবা দিচ্ছেন মালদেহ হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মাছ ব্যবসায়ী জয়দেব হালদার। তিনি টানা দু’বার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। তবুও নিজের পেশা মাছ বিক্রি ছাড়েননি তিনি। সহকর্মী, দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি বিরোধীদের কাছে প্রশংসিত জয়দেব বাবু।পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে ভোটে জেতার পরে আঙুল ফুলে কলা গাছের অভিযোগ প্রায় ওঠে মালদার জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। সে অভিযোগের তালিকায় রাজ্যের শাসক দলের একাংশ জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, পঞ্চায়েত সদস্যদের টালির বাড়ি ভোটে জেতার পরে ভোল বদলে গিয়েছে। সাইকেলের বদলে বাড়ির গ্যারেজে ঠাঁই হয়েছে কালো, সাদা রঙের বিলাসবহুল গাড়ি। তবে, ব্যতিক্রমই চরিত্র বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোবা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা জয়দেব হালদার। তিনি ২০১৮ সালে তৃণমূলের টিকিটে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হন। ২০২৩ সালেও দল টিকিটে তিনি জয়ী হন। এ বারে দল তাঁকে বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষি সঞ্চালক করেছে। টাঙন নদীর পারে একটি পাকা এবং দুটি টিনের ঘর রয়েছে তাঁর। পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার আগে ২০১৮ সালে ইন্দ্রিরা আবাসের ঘর পেয়েছিলেন তিনি। সে ঘরটিই পাকা রয়েছে, দাবি জয়দেবের। তিনি বলেন, “এ বার আমার বুথে ছয় জন আবাসের ঘর পেয়েছেন। আরও অনেক মানুষের ঘরের প্রয়োজন রয়েছে। সে তালিকাও দফতরে পাঠানো আছে।” পঞ্চায়েত অফিস, নিজের বুথে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি নিজের পেশার টানে দৈনিক ভোর চাটে তিনি হাজির হন বুলবুলচণ্ডী মাছ বাজারে। কত বছর ধরে মাছ বিক্রি করছেন? জয়দেব বলেন, “২০ বছর ধরে মাছ বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। মানুষ আমাকে পঞ্চায়েত সদস্য করেছেন। মানুষের জন্য কাজও করছি। তবে সংসার তো চালাতে হবে। তাই পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার পরেও নিজের পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। জয়দেববাবু আরো জানান এবার নিয়ে আমি দুবারের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। রাজনীতিতে আসার উদ্দেশ্য আমাদের গ্রামবাসীদের জন্য যেন আরো কাজ করতে পারি।
এবং উপকার করতে পারি গ্রামের মানুষের।১১ টা মধ্যে ব্যবসা শেষ করে আমি রাজনীতি করি। যেহেতু দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে আমি ব্যবসার সাথে যুক্ত তাই ব্যবসা আগে তারপর রাজনীতি। কারো যদি কোন সমস্যা থাকে, আমি মাছ বিক্রি করতে করতে সেই সমস্যার সমাধান করি। আগামীতেও মানুষের জন্য এভাবেই কাজ করে যাব। এই নিয়ে রাজনীতির মহলে প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct