নিজস্ব প্রতিবেদক , কলকাতা, আপনজন: “এক দেশ, এক ভোট” প্রকৃতপক্ষে দেশবিরোধী অতি দক্ষিণপন্থী বিভেদকামী শক্তির বিপজ্জনক অ্যাজেন্ডাকে সামনে নিয়ে আসার এক নয়া কৌশল। মঙ্গলবার এক প্রেস বিবৃতিতে একথা বল আইএসএফ। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’- এটাই ভারতবর্ষের নানান ধর্ম, জাতি, ভাষার, বর্ণের মিলনকে সুদৃঢ় করেছে। ওই বিভেদকামী শক্তির প্রতিনিধি সঙ্ঘ পরিবার বরাবরই এই ঐক্যকে ভাঙতে সক্রিয়। ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে তাই নরেন্দ্র মোদী “এক দেশ, এক ভোট” নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এরপর একের পর এক জুমলা করে দেশকে সর্বনাশের কিনারায় খাড়া করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এই সরকারের বদান্যতায় আদানি-আম্বানীদের পৌষমাস আর গরিবদের সর্বনাশ। আইএসএফের অভিযোগ, মানুষের হাতে কাজ নেই। দেশে বেকারের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় দশ লক্ষ শূন্যপদ। অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধি। শিক্ষা ব্যবস্থা তলানিতে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বেহাল। মোদীর প্রতিশ্রুতির ফানুস চুপসে গেছে। এহেন অবস্থায় “এক দেশ, এক নির্বাচন” নিয়ে মাতামাতি মানুষের মনকে বিক্ষিপ্ত করার লক্ষ্যেই করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে দেবারও ষড়যন্ত্র। পাশাপাশি, রাজ্যের হাতে ক্ষমতা সঙ্কুচিত করে অতিকেন্দ্রীকরণের দিকে দেশকে নিয়ে যাবার অপচেষ্টা। রাষ্ট্রপতি ধাঁচের সরকার তৈরি করে স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবারও চক্রান্ত। আইএসএফের মতে, এই মুহুর্তে এই আইন তৈরি করতে সংবিধানের ৩৬৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করতে হলে সংসদের দুই কক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। এখন বিজেপি ও তার সহযোগী দলগুলির সেই সমর্থন নেই। আসলে, বিক্ষুব্ধ মানুষের মনকে অন্যদিকে চালনা করার জন্য স্বৈরাচারীরা এটাই করে।
অাইএসএফের আরও অভিযোগ, মোদী নিজেকে প্রথম থেকেই একজন জননায়ক (ডেমাগগ) হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত থেকেছেন। একসাথে ভোট হলে মানুষকে আরো বেশি প্রভাবিত করা যেতে পারে, এই ধরণের চিন্তাও কাজ করছে। এটাও দেখার বিষয় এর মাধমে দেশের জনসাধারণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির দায়বদ্ধতা কমে যাবে। মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে নির্বাচনগুলি। ক্রমশ কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত পড়বে নির্বাচন প্রক্রিয়া, কেননা এই বিশাল কর্মকাণ্ড চালানোর ক্ষমতা বা অর্থ কোনটিই নেই নির্বাচন কমিশনের।
কিন্তু দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো রক্ষা করতে, সংসদীয় গণতন্ত্র বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধভাবে বিরোধিতা করতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct