নিজস্ব প্রতিবেদক , অরঙ্গাবাদ, আপনজন: ১২টি ক্লাস রুম থাকলেও শিক্ষকের অভাবে ঠিকমতো হচ্ছে না ক্লাস। তাই বেড়ে চলেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। ১১৮৩ জন ছাত্র ছাত্রীতে একজন প্যারাটিচার সহ মাত্র পাঁচজন শিক্ষক! মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের দক্ষিণ চকসাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় চালাতে হিমসিম অবস্থা শিক্ষকদের। দৈনিক গড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র ছাত্রীর উপস্থিতির মধ্যেই আবার পঞ্চম শ্রেণীতেও ভর্তির নির্দেশ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের! বেশিরভাগ সময় ভোটের কাজেই ব্যস্ত প্যারাটিচার সহ আরো দুই টিচার! কিভাবে চলবে পঠন পাঠন? কেনো বাড়বে না স্কুল ছুট? ১২ টি ক্লাস রুম থাকলেও শিক্ষকের অভাবে ঠিকমতো হচ্ছে না ক্লাস। ফলে বছরের বেশিরভাগ সময় বেসরকারি স্কুলেই যাচ্ছে শিশুরা। বাড়ছে অনুপস্থিতির হারও। উৎসশ্রীর আগে স্কুলে ১১ জন শিক্ষক থাকলেও ট্রান্সফার হয়ে বর্তমানে ৫ জন পৌঁছেছে।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের দক্ষিণ চকসাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শুধুমাত্র চকসাপুর গ্রাম থেকেই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করতে আসেন। কিন্তু গ্রামের পরিধি বেশি হওয়ায় একই গ্রামের মধ্যে পাঁচ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রী আসে এই স্কুলে। বিড়ি শ্রমিক রাজমিস্ত্রি অধ্যুষিত এই এলাকার স্কুলে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১৮৩. দিন কয়েক আগে অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষায় উপস্থিতি ছিল প্রায় সাড়ে নয়শো। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেফাউর রহমানের দাবি, প্রত্যেকদিন প্রায় চার থেকে পাঁচ শতাধিক ছাত্র ছাত্রীর জন্য রান্না করতে হয়।
পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকাই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক তথা স্থানীয় বাসিন্দা সেনাউল হক জানান, পাঁচ জন শিক্ষকের মধ্যে তিন জন শিক্ষক বেশিরভাগ সময়ই ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকেন। কোনো কোনো দিন বিশেষ কাজে একজন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। এত বিপুল পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী এই কয়েকজন শিক্ষকের দ্বারা পড়াশুনা করানো প্রায় অসম্ভব। চরম সমস্যায় রয়েছি আমরা। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, স্কুলে এত বিপুল পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকাই পড়াশুনা কার্যত লাটে উঠছে। বাড়ছেই স্কুল ছুট। বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝুঁকছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। সরকারের কাছে অবিলম্বে শামশেরগঞ্জের এই স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষক দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন গ্রামবাসি থেকে শুরু করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকরা। ধুলিয়ানচক্রের খবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সূত্রের খবর, সামশেরগঞ্জের দক্ষিণ চকসাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষকের মধ্যে সেনজারুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক বেশিরভাগ সময়ই স্কুলে আসেন না। একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে তাকে। দুদিনের মধ্যে জয়েন না করলে বেতন আটকে রাখার কথাও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে এসআইঅফিস থেকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct