আপনজন ডেস্ক: বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ইস্যুতে উত্তেজনা চলছে। তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, বেইজিং এবং ওয়াশিংটন যদি একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে “অনেক বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব”। আগামী জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে তিনি এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের “অশোভন হস্তক্ষেপের” ব্যাপারে কঠোর সতর্কবার্তা দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মঙ্গলবার বেইজিংয়ে এক অনুষ্ঠানে চীনের কূটনৈতিক কার্যক্রমের ওপর আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে তিনি তাওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের “অযাচিত হস্তক্ষেপ” এর বিরোধিতা করেন। তাওয়ান ইস্যুকে তিনি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এটিতে হস্তক্ষেপকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেন। তিনি আরও বলেন, “চীনের নীতি কখনো পরিবর্তন হয়নি। চীন-যুক্তরাষ্ট্র যদি পারস্পরিক সহযোগিতায় এগিয়ে যায়, তাহলে আমরা অনেক বড় কিছু অর্জন করতে পারব।” তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক দলগুলোর কাজ এবং সীমান্ত-পারবর্তী মাদক নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা তারই প্রমাণ। তবে তিনি তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, “আমাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আমরা দৃঢ় পদক্ষেপ নেব।” উল্লেখ্য, তাইওয়ানকে চীন নিজেদের অংশ বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে আত্মরক্ষার জন্য সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের চারপাশে চীনের সামরিক মহড়া বৃদ্ধি পায়, যেখানে প্রায় ৯০টি নৌযান অংশ নেয় এবং সমুদ্রপথ অবরোধের অনুশীলন করা হয়। এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও সংকটের মুখে পড়তে পারে। ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে “অন্যায্য বাণিজ্য চর্চা”র অভিযোগ তুলে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। চীন এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। ওয়াং ই আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্প প্রশাসন “সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে” এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের সঙ্গে কাজ করবে।
বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ওয়াং ই বলেন, “বর্তমান বিশ্ব অস্থিরতা ও পরিবর্তনে ভরা। ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত বেড়ে চলেছে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে।” তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “চীন শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাবে।” তিনি আরও বলেন, চীন গত বছর গাজা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে হামাস ও ফাতাহর মধ্যে ঐক্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছে। সিরিয়ার পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, চীন দেশটির সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে।রাশিয়ার সঙ্গেও চীনের কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন ওয়াং ই। যদিও পশ্চিমা দেশগুলো চীনের এই অবস্থানের সমালোচনা করে আসছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct