আপনজন ডেস্ক: আরব বিশ্বের পতিত স্বৈরশাসক তিউনিসিয়ার বেন আলি, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি, ইয়েমেনের আলি আবদুল্লাহ সালেহ, মিশরের হোসনি মোবারকের মতোই স্বৈরশাসকদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ। গেল ৮ ডিসেম্বর প্রাণ বাঁচাতে সিরিয়া থেকে পালিয়ে যান তিনি। এরই মধ্য দিয়ে ভেঙে যায় দীর্ঘ ২৪ বছর সিরিয়ার ক্ষমতা থাকা মসনদ। বিদ্রোহীরা তার বাড়ি দখল করে দেখে, সেদিন তিনি তাড়াহুড়ো করে পালিয়েছেন। রান্না করা খাবার চুলায় রয়ে গেছে। তার ব্যক্তিগত অ্যালবামগুলো সেখানেই পড়ে আছে।
সিরিয়ায় আসাদের শেষ সময়টা কেমন ছিল, শেষ সময়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে তিনি কী কী চেষ্টা করেছেন, মিত্র রাশিয়া বা ইরানের কাছে সামরিক সহায়তা চেয়েছিলেন কিনা, নিজের আত্মীয় বা কাছের লোকদেরই বা কী কী বলেছেন কিংবা কীভাবে দামেস্ক থেকে পালিয়ে মস্কো গেলেন—এসব প্রশ্ন বার বার সামনে আসছে। এসব প্রশ্নের উত্তর ও রহস্যের জাল উন্মোচন করতে অন্তত ১৪ জন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স।
রয়টার্সের ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল আসাদ পতনের সময় সিরিয়া ছাড়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রায় কাউকেই জানাননি। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী, কর্মকর্তারা, এমনকি আত্মীয়রাও এ বিষয়ে অন্ধকারে ছিলেন। রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন, আসাদ ঘনিষ্ঠ এমন ১২ জনের মতে, আসাদ তার পরিকল্পনা গোপন রাখতে বড় ধরনের প্রতারণা ও ফাঁকির আশ্রয় নিয়েছিলেন।
দেশ ছাড়ার আগেরদিন শনিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৩০ জন সামরিক এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তার একটি বৈঠকে আসাদ বলেন, রুশ সামরিক সহায়তা আসছে। পদাতিক বাহিনীকে সাহস রেখে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর নিজেই জীবন বাঁচাতে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। রয়টার্স জানায়, পালিয়ে যাওয়ার কয়ে ঘণ্টা আগে নিজ কার্যালয়ের ম্যানেজারকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার কথা জানালেও আসলে তিনি বিমানবন্দরে চলে যান। তার মিডিয়া উপদেষ্টা বুতাইনা শাবানকে বাড়িতে ডেকে বক্তৃতা লেখার কথা বলেন। শাবান সেখানে পৌঁছে তাকে না পেয়ে হতভম্ব হন। পরাজয় আসন্ন, এটা বুঝতে পেরেও ইরানকে সামরিক হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেননি আসাদ। তার আশঙ্কা ছিল, এতে ইসরায়েল তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে। আর, মস্কোর পক্ষ থেকেও সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct