সঞ্জীব মল্লিক , বাঁকুড়া, আপনজন: নদী পেরিয়ে স্কুল, বছরের অধিকাংশ সময় হাঁটু জল পেরিয়ে স্কুলে যায় সিমলাপালের সাঁইড়ি, আকড়ো, পুইপাল, খামারডাঙ্গা সহ একাধিক গ্রামের ছেলে মেয়েরা। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়ার এই ছবি দশকের পর দশকের। গ্রামের মানুষের আক্ষেপ, দিন বদলালেও পরিস্থিতি বদলায়নি। কয়েক দশক আগে আমরা এই নদী ডিঙ্গিয়ে স্কুলে যেতাম, এখন আমাদের ছেলে মেয়েরা যাচ্ছে!
উল্লেখ্য, শিলাবতী নদী তীরবর্তী সিমলাপালের সাইড়ি সহ একাধিক গ্রামের ছাত্র ছাত্রীরা ভর্তি হয় নদীর ওপারে লায়েকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। বর্ষার দিন গুলিতে অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ, কারণ সিমলাপাল হয়ে অন্তত ১৫ কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে পৌঁছানো একেবারেই অসম্ভব।
গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকায় তেমন কোন স্কুল নেই, ফলে নদী পারের লায়েকপাড়াই ভরসা। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়েও আমরা নিশ্চিন্ত থাকতে পারিনা। তবে বেশী সমস্যা হয় পরীক্ষার দিন গুলিতে। সেই সময়ে নদীতে জল বাড়লে ঘুর পথে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পৌঁছানোই অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে এই এলাকায় একটি সেতু তৈরি জরুরি বলে তারা জানান।
ছাত্র ছাত্রীরাও জানিয়েছে, বর্ষার দিন গুলিতে আমাদের স্কুলে যাতায়াত বন্ধই থাকে। ফলে পড়াশুনায় যথেষ্ট ক্ষতি হয় বলেই তারা জানিয়েছে।
জঙ্গল মহলের ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভাবেনা রাজ্য প্রশাসন, দাবি বিজেপির। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, প্রশাসনিক উদাসীনতার শিকার ওই গ্রামের ছাত্র ছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে তারা কথা বলবেন বলে তিনি জানান।
যদিও এই ব্যবস্থার পিছনে ওই এলাকার অভিভাবকদের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন তালডাংরার নব বির্বাচিত বিধায়ক তথা ঘটনাচক্রে ওই এলাকার বাসিন্দা ফাল্গুনী সিংহবাবু। তিনি বলেন, শিক্ষা জীবনে আমরাও নদী পেরিয়ে স্কুলে গেছি।
তবে সমস্যা সমাধানে ওই এলাকার বাঁশিপুরে উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরী করা হয়েছিল, কিন্তু ওই স্কুলে তাদের ছেলে মেয়েদের অভিভাবকেরাই পাঠাচ্ছেননা। তবে শুধুমাত্র বাচ্ছাদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য সেতু তৈরী সম্ভব নয় বলেও তিনি জানিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct