হাসিবুর রহমান , ঘুটিয়ারি শরীফ, আপনজন: পুলিশের পিছনে বরাবরই দুর্গন্ধ রয়েছে। সেই দুর্গন্ধ সর্বদাই প্রচারিত। দুর্গন্ধের আড়ালেও যে পুলিশ ভালো কাজ করে সমাজের বুকে,সেটা অবশ্য কেউ মনে রাখতে চায় না।নানান ধরনে সমস্যা এবং অজুহাত চিয়ে ঢেকে ফেলতে চায় সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশ ও যে আমাদের মতো রক্ত মাংসে গড়া মানুষ সেটা ভুলে গেলে চলবে না। পুলিশ ও মানবিক। তাঁরাও কারোর পরিবার পরিজন রক্ত মাংসে গড় মানুষ।সাম্প্রতিক পুলিশের এক মানবিক কর্মযঞ্জ সাধারণ মানুষের টনক নাড়িয়ে দিয়েছে।হৃদয় বিদারক ঘটনা। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং লাইনে ঘুটিয়ারী শরীফ ষ্টেশন রয়েছে। ঐতিহাসিক গাজী বাবার মাজারের জন্য বিখ্যাত ঘুটিয়ারী শরীফ। প্রতিদিনই হাজার হাজার সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। কেউ ধর্মীয় স্থান মাজারে যায়,কেউ আবার অন্যান্য কাজের জন্য কলকাতা ক্যানিং সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন বিখ্যাত ঘুটিয়ারী শরীফ স্টেশন দিয়েই। স্টেশন থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে রয়েছে বারুইপুর পুলিশ জেলার অধিনস্থ ঘুটিয়ারী শরীফ পুলিশ ফাঁড়ি।এছাড়াও নিত্যদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত করেন।সেখানে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বছর চল্লিশ বয়সের এক ব্যক্তি ফুটপাথে পড়ে রয়েছে। জরাজীর্ণ অবস্থায়।দেহের বিভিন্ন অংশে ক্ষতস্থান রয়েছে।ক্ষতস্থানে পচন ধরেছে। পোকা গিজগিজ করছে। কিলবিল করে বেরিয়ে আসছে। প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।যে কোন মুহূর্তে মৃত্যুও হতে পারে। তবুও মরণাপন্ন অঞ্জাত পরিচয় ব্যক্তি বাঁচতে চায়। কিন্তু খোলা আকাশের নীচে সেটা কিভাবে সম্ভব?কে বা বাড়িয়ে দেবে সাহায্যের হাত?এতোসবের মধ্যে পথচলিত সাধারণ মানুষ সাহায়্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। রবং দুর্গন্ধ এড়াতে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যে যার গন্তব্যে চলে গিয়েছেন প্রতিদিনই। এমনটাই চলছিল দীর্ঘ প্রায় ৪৫ দিনের অধিক সময়।লোক মুখে এমন ঘটনার কথা মঙ্গলবার রাতে পৌঁছায় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সুকুমার রুইদাস এর কাছে। কাকবিলম্ব না করে সহ কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজীর হন সুকুমার।কোন রকম ঘৃণা না করেই জরাজীর্ণ দুর্গন্ধযুক্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ঘুটিয়ারী শরীফ ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে অঞ্জাত পরিচয় ওই ব্যক্তি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশের এমন মানবিক কর্মকান্ড প্রকাশ্যে আসতেই প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষজন। ঘটনা প্রসঙ্গে ঘুটিয়ারী শরীফ ফাঁড়ির ওসি সুকুমার রুইদাস জানিয়েছেন,মানুষ হিসাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে এটা আমার কর্তব্য বলে মনে হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, অঞ্জাত পরিচয় ওই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠলে তার পরিচয় জানার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি তিনি যাতে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরতে পারে সেই ব্যবস্থাই করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct